নিয়ম বহির্ভূত ভাবে তৃণমূল নেতা এবং ঘনিষ্ঠদের নাম আবাস যোজনার তালিকায় রয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। —প্রতীকী চিত্র।
আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যের শাসকদলের একের পর এক নেতা এবং নেতাঘনিষ্ঠকে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে সরকারি সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করছে বিরোধীরা। এই প্রেক্ষিতে দলের নেতাদের ‘আত্মত্যাগ’-এর বার্তা দিলেন তৃণমূল নেতা। কার্যত ফরমান জারি করলেন তিনি। জানালেন কোনও তৃণমূল নেতা কিংবা তাঁর পরিবার যেন আবাস যোজনার পরিষেবা না নেন। এতেই বিরোধীদের অভিযোগ দুরমুশ করে দেওয়া যাবে বলে দাবি করলেন কোচবিহারের তৃণমূল জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। এই মর্মে ফেসবুকে একটি পোস্টও করেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি নিয়ে বিজেপির পক্ষ থেকে যখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠছে, তখন দলের পঞ্চায়েত প্রধান-সহ দলীয় নেতৃত্বকে আবাস যোজনার বাড়ি না নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কোচবিহার তৃণমূল নেতৃত্ব। এ নিয়ে অভিজিতের নির্দেশ, কোনও পঞ্চায়েত প্রধান বা আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাওয়া ইচ্ছুক নেতারা যেন তাঁদের নামে সরকারি ঘর বরাদ্দ হলে ওই তালিকা থেকে নিজেদের নাম ছেঁটে ফেলেন। প্রশাসনের কাছে নিজেদের নাম বাতিলের যেন আবেদন করেন তাঁরা। অভিজিৎ তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্য দিয়ে আমাদের দল গড়ে উঠেছে। তাই দলের পঞ্চায়েত সদস্য সদস্য বা সদস্যা এবং আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের পদপ্রার্থী যাঁরা হবেন, তাঁদের কাছে অনুরোধ আপনারাও দৃষ্টান্ত তৈরি করুন।’’ তৃণমূল নেতার সংযুক্তি, ‘‘এই ত্যাগ বিজেপির তোলা স্বজনপোষণের অভিযোগের মুখে ঝামা ঘষে দেবে।’’
যদিও এ নিয়েও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ করতেই জেলা সভাপতির এমন নির্দেশ বলে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। কোচবিহারের বিজেপি জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘ঘর পাওয়ার তালিকায় পঞ্চায়েত প্রধানদের তালিকা থেকে বেশি রয়েছে তৃণমূলের নেতাদের নাম। এই নেতাদের যদি (অভিজিৎ) বলতে পারেন যে, আপনারা ঘর নেবেন না, তা হলে সত্যিকারের গরিব মানুষরাই ঘর পাবেন। কিন্তু আমাদের দাবি নতুন করে সমীক্ষা করতে হবে। নতুন করে ঘরের তালিকা তৈরি করতে হবে। তাহলেই প্রকৃত উপভোক্তারা বাড়ি পাবেন।’’