পুজোয় বসেছেন মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
কীর্তনের আসরের লড়াই চলছিল। এ বারে শিবেও মজলেন নেতা-মন্ত্রীরা। কেউ পুজো দিলেন, কেউ মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করলেন। রাজ্যের শাসকদলের নেতা-মন্ত্রী থেকে কেন্দ্রীয় শাসক দলের সাংসদ সবাইকেই দেখা গেল শিবের পুজোয় অংশ নিতে।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের কোচবিহার জেলার প্রাক্তন সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ থেকে শুরু করে বিধায়ক উদয়ন গুহ একাধিক মন্দিরে গিয়েছেন। তাঁরা পুজোও দিয়েছেন। বিজেপির সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকও পুজো দিয়েছেন। সবাই অবশ্য দাবি করেন, বরাবরের মতো এবারেও তাঁরা শিবের পুজোয় অংশ নিয়েছেন। কেউ কেউ অবশ্য দাবি করেন, ভোট বড় বালাই। সবই জনগণকে মোহিত করার চেষ্টা।
মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ শুক্রবার যান জল্পেশ মন্দিরে। শনিবার তিনি নাককাটিগছের মহাদেবের ধাম, ধলুয়াবাড়ি শিব মন্দির হয়ে বাণেশ্বরে যান। সেখানে তিনি পুজো দেন। তিনি বলেন, “ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি জড়িয়ে দেওয়া ঠিক নয়। আমি বরাবর নিজের ধর্ম পালন করি। অন্যের ধর্মকেও শ্রদ্ধা করি। হলদিবাড়িতে হুজুর সাহেবের মেলাতেও যোগ দিয়েছি।”
দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ চড়কের মাঠ-সহ একাধিক মন্দিরে যান। তিনি জানান, মাসে এক বার করে তিনি দিনহাটার বড় শিবমন্দিরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, “বরাবর ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিই, পুজো দিই। এ বারেও দিয়েছি।” সাংসদ নিশীথ পুজো দেন গোসানিমারিতে নটবরের ধামে। নিশীথ বলেন, “ধর্ম একদমই নিজস্ব ব্যাপার। আমি বরাবর বাণেশ্বর-সহ বিভিন্ন শিবমন্দিরে যাই। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।” বিজেপি’র কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “পুজোর সঙ্গে রাজনীতির বিষয় নেই। সবাই অংশ নেবেন এটাই স্বাভাবিক।”
দলীয় সূত্রের খবর, লোকসভায় কোচবিহার আসন হাতছাড়া হওয়ার পরে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়ে তৃণমূল। রামনবমী’র মতো ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে হাতিয়ার করে বিজেপি নিজেদের সংগঠন শক্তিশালী করতে আসরে নামে। এ ছাড়া বিজেপি নেতা-নেত্রীদের একাধিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে দেখাও যায়। বিজেপি এ বারে কোচবিহার জেলা দফতরে সরস্বতী পুজোরও আয়োজনও করে। সেখানে তৃণমূল অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। কীর্তনের আসর দিয়েই ওই অবস্থার পরিবর্তন ঘটনাতে আসরে নামতে দেখা যায় তৃণমূল নেতাদের। মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ গত কয়েক সপ্তাহ ধরে টানা কীর্তনে যোগ দেন। বাতাসা ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ভক্তদের সঙ্গে বসে প্রসাদ নিতেও দেখা যায় তাঁকে। একই ভাবে দেখা যায় উদয়নকেও। এবারেই দুই নেতাই একাধিক শিব পুজোর যোগ দিলেন।