—প্রতীকী চিত্র।
২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতিসভায় লোকসভা ভোটের পর্যালোচনা করতে গিয়ে পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী তথা মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র দলের একাংশ নেতাদের ‘গদ্দার’(বিশ্বাসঘাতক) বলে তোপ দাগলেন। গত কয়েক দিনে তপন, গঙ্গারামপুর, বুনিয়াদপুর, হরিরামপুরের এই সভাগুলিতে গিয়ে লাগাতার বলেছেন, ‘‘দলের কয়েক জন গদ্দারের জন্য হেরেছি। এটা আমার পরাজয় নয়। এটা আসলে দলের পরাজয়।’’
বিপ্লব এই সভাগুলিতে এমনও জানাচ্ছেন, দলের কয়েক জন বিজেপির থেকে টাকা খেয়ে এই বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিপ্লবের এই ‘হুঁশিয়ারির’ পরেই দলের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়েছে, এই ‘বিশ্বাসঘাতকদের’ কী ভাবে চিহ্নিত করা হবে? যদিও তৃণমূলের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল জানান, ‘‘বিপ্লবদা হয়তো নিজের মতো করে রিপোর্ট দিয়েছেন, কারা কারা বিশ্বাসভঙ্গ করেছেন। দল নিশ্চয়ই সেই রিপোর্ট যাচাই করবে। তার পরে, ব্যবস্থা নেবে।’’ তবে দল তাঁকে ‘বিশ্বাসঘাতকদের’ তালিকা করতে নির্দেশ দেয়নি বলেই জানিয়েছেন সুভাষ।
তৃণমূল সূত্রে খবর, বালুরঘাট আসনে ১২ হাজার ভোটে হারের পরে, দলের অন্দরে ‘বিরোধী’ গোষ্ঠীর নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিপ্লব। দলের একাংশের দাবি, বিপ্লব বিরোধী নেতাদেরই 'গদ্দার' বলা হয়েছে। দলীয় সভায় লাগাতার দলের একাংশের বিরুদ্ধে এমন আক্রমণ ‘ভাল’ চোখে নিচ্ছেন না বিপ্লব-বিরোধীরাও। তাঁদের দাবি, দায়িত্বপ্রাপ্তদের এলাকায় যদি ভোটের ফল খারাপ হয়, সে ক্ষেত্রে সে সব নেতার ভূমিকা বা কাজ নিয়ে পর্যালোচনা করা অবশ্যই উচিত। কিন্তু শুধু নিজের 'অপছন্দের' নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন মন্ত্রী—এমনটাই তাঁদের দাবি। তাঁদের ইঙ্গিত, বিপ্লবের ভাই গঙ্গারামপুর পুরসভার পুরপ্রধান প্রশান্ত মিত্র পুরসভার কোনও ওয়ার্ডেই দলকে ‘লিড’ দিতে পারেননি। তা হলে ‘বিশ্বাসঘাতকের’ তালিকায় মন্ত্রী কি নিজের ভাইকে রাখবেন? পাশাপাশি, মন্ত্রী নিজের ওয়ার্ডে ‘লিড’ পাননি। জেলা সভাপতিও নিজের এলাকায় পিছিয়ে রয়েছেন। সে সব ক্ষেত্রে কী করা হবে, সে প্রশ্নই ঘুরছে দলের অন্দরে। তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার বলেন, ‘‘প্রকাশ্যে কয়েক জনকে বিশ্বাসঘাতক বলে দেগে দেওয়া যায় না। উনি যদি পর্যালোচনা চান, সবার সঙ্গে বসতে হবে। আমাদেরও প্রশ্ন রয়েছে।’’ এ নিয়ে বিপ্লব ও ভাই প্রশান্তকে ফোন ও মেসেজ করা হলেও উত্তর মেলেনি।