৬ মার্চ পর্যন্ত একটানা এই কর্মসূচি চলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা-নেত্রীরা। —নিজস্ব চিত্র।
চা বাগানের শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ)-সহ নানা দাবিদাওয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লার বাড়ি ঘেরাও করে ধর্নায় বসেছে তৃণমূল। বুধবার আলিপুরদুয়ারে মন্ত্রীর বাড়ির সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা-নেত্রীরা। ৬ মার্চ পর্যন্ত একটানা এই কর্মসূচি চলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। যদিও মন্ত্রীর দাবি, শ্রমিকদের পিফের টাকা দেওয়া হলেও তাঁদের হাতে পৌঁছয় না। এ নিয়ে বাগান মালিকদের গ্রেফতারির দাবিতে তাঁরা থানা ঘেরাও করবেন।
বুধবার সকাল থেকেই মন্ত্রীর বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেছেন শাসকদলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র জলপাইগুড়ি শাখা। তাতে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলের চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের কর্মী-সমর্থকেরাও। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের অভিযোগ, চা শ্রমিকদের পিএফ নিয়ে দুর্নীতি করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তাঁর বাজেটে চা শ্রমিকদের সার্বিক উন্নয়নের জন্য ১ হাজার কোটি টাকা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন। তবে সেই টাকার দাবি করেছেন বিক্ষোভকারীরা। এ ছাড়া, শ্রমিকদের অবসরের বয়স ৫৮ বছর করার দাবিও তুলেছেন তাঁরা। চা বাগানের ছাত্র-ছাত্রীদের ভাতার টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তা চালু করার দাবি-সহ একাধিক দাবিদাওয়ায় এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে জানিয়েছেন তাঁরা।
জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, বুধবারের এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি রাজেশ লাকড়া, তৃণমূলের চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজু গুরুং, তবারক আলি, সুজু ছেত্রী, সঞ্জয় কুজুর-সহ অনেকে। রাজেশ বলেন, ‘‘আমরা মূলত ৪ দফা দাবিতে ধর্নায় বসেছি। জলপাইগুড়ি এবং শিলিগুড়ির পিএফ দফতরে দুর্নীতি হয়েছে। সেই দুর্নীতিতে বিজেপির মন্ত্রী জন বার্লাও পিএফ দফতরের সঙ্গে যুক্ত। সে জন্য আমরা ওঁর বাড়ির সামনে ধর্নায় বসেছি।’’
তৃণমূলের এই অভিযোগ নস্যাৎ করেছেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী বার্লা। তাঁর দাবি, ‘‘ওঁরা (তৃণমূল) পিএফ নিয়ে আন্দোলন করছে। তবে ইতিমধ্যেই বহু বাগান মালিকের নামে কেস করেছে পিএফ দফতর। আজও সেই কেসগুলি থানায় পড়ে রয়েছে। শ্রমিকদের পিএফ কাটলেও তাঁদের পিএফের টাকা দেওয়া হচ্ছে না। তার জন্য দায়ী চা বাগান মালিকেরা। তাই আমার বাড়ি ঘেরাও না করে ওঁরা যদি থানা ঘেরাও করতেন, তা হলে ভাল হত। এই বাগান মালিকদের পুলিশ গ্রেফতার করলে হয়তো ঠিকঠাক পিএফ জমা হবে। আমি নিজেও এ নিয়ে মামলা করেছি। শ্রমিকদের পিএফের জন্য বাগান মালিকদের গ্রেফতারির দাবিতে ভবিষ্যতে আমরা থানা ঘেরাও করব।’’
বুধবারের এই কর্মসূচিকে ঘিরে এলাকায় যাতে কোনও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সে জন্য সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়ির সামনে বানারহাট থানার পুলিশকর্মীদের মোতায়েন করা হয়েছে।