নিশীথকে পাশে নিয়ে সুকান্ত জানান, যে দলীয় কর্মীদের বাড়ি ভাঙচুর করেছে তৃণমূল, তাঁরা নতুন বাড়ি পাবেন। —নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে হামলার ৪ দিন পর কোচবিহারে এলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আহত এবং আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দেখা করার পর উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহকে নিশানা করেন সুকান্ত। পাশাপাশি, তাঁদের ঘোষণা, যে বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুর করেছে শাসকদলের কর্মীসমর্থকেরা, সকলের বাড়ি তৈরি করে দেবেন তাঁরাই। রাজ্য সভাপতির পাশে দাঁড়িয়ে নিশীথও একই কথা ঘোষণা করেন।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ সুকান্ত নিউ কোচবিহার স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে রওনা দেন দিনহাটার দিকে। তাঁর সঙ্গে যোগ দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ, বিজেপির জেলা সভাপতি সুকুমার রায়, বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামীরা। সাহেবগঞ্জের বিজেপি পার্টি অফিস যান তাঁরা। বিজেপির অভিযোগ সে দিনের গন্ডগোলের পর তৃণমূল তাদের কার্যালয় ভাঙচুর করেছে। এর পর সুকান্তরা চলে যান কালমাটিতে দলীয় কর্মী পরিমল বর্মণের বাড়ি। সেখান থেকে শিমুলতলা। দিনহাটা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মুন্না শাহের বাড়ি।
পরিদর্শন শেষে সুকান্ত বলেন, ‘‘দিনহাটার বিধায়ক (উদয়ন গুহ) কম্পার্টমেন্টাল বিধায়ক। গাড়ি ভর্তি করে লোক নিয়ে এসে আমাদের কর্মীসমর্থকদের ওপর অত্যাচার এবং বাড়িঘর ভাঙচুর করছে। আমরা বার বার হুঁশিয়ারি দিচ্ছি, এখনও সময় আছে শুধরে যান। না হলে আমাদের এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যে তখন শুধরানোর সময় পাবেন না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মানুষের সমর্থন হারিয়ে ফেলেছেন উদয়ন গুহ। এখন যদি দিনহাটায় ভোট হয় তাহলে ৫০ হাজার ভোটে হারবেন উদয়ন। আর ওঁর মনে রাখা উচিত, সব ক্রিয়ার একটি বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে। আশা করি তিনি ভুলে গিয়েছেন। মনে না থাকলে দেওয়ালে লিখে রাখুন। সময় এলে আমরাও বুঝিয়ে দেব।’’ উল্লেখ্য, গত নির্বাচনে ১ লক্ষ ৬৪ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হন উদয়ন। পরে তাঁকে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সুকান্ত অভিযোগ করেন তাঁদের ৪৮ জন নেতানেত্রীর বিরুদ্ধে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা করেছে। কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘আমাদের বিজেপির ৭টি মোর্চা আছে। তেমনই তৃণমূলেরও একটি মোর্চা আছে। সেটা পুলিশ মোর্চা বা মামা মোর্চা। তৃণমূল নেতাদের ওপর কোনও পদক্ষেপ করার ক্ষমতা পুলিশ প্রশাসনের নেই।’’
আর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ বলেন, ‘‘আমরা কথা দিয়েছিলাম, আমাদের কর্মীদের উপর যদি আঘাত আসে, আমরা তাঁদের পাশে থাকব। সেই কারণে আমরা আজ এসেছি। যাদের কাঁচা বাড়ি ভাঙবে তাঁদের পাকা বাড়ি করে দেব। যাঁদের এক তলা বাড়ি ভাঙবে, তাঁদের দোতলা বাড়ি আমরা তৈরি করে দেব। তৃণমূল যেখানে যেখানে বাড়ি ভাঙবে, অগ্নিসংযোগ করবে, আমরা সেখানে সেখানে গিয়ে সে সব কর্মীদের পাশে থাকব। প্রয়োজনে তাঁদের বাড়ি বানিয়ে দেব। তাঁদের বিপদে-আপদে সব সময় পাশে থাকব।’’