জখম মৃদুল। নিজস্ব চিত্র
পুরপ্রধানের চেয়ারে বসতে না বসতেই গঙ্গারামপুরের তৃণমূলের শ্রমিক নেতা মৃদুল ঘোষকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল অমল সরকারের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। শুধু মারধরই নয়, মৃদুলের অফিসও ভাঙচুর করা হয়েছে। শনিবার রাত ১০টা নাগাদ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ওয়াংডেন ভুটিয়ার নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে দু’পক্ষকে সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে করে। এ দিকে পুরসভার জট কাটতে না কাটতেই ফের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসতে অস্বস্তিতে দলও।
তৃণমূলের প্রহৃত শ্রমিক নেতা মৃদুল বলেন, ‘‘যাঁরা বিজেপি করতেন তাঁরাই এখন নব্য তৃণমূল হয়েছেন। পুরপ্রধানের নেতৃত্বে সেই সব দুষ্কৃতীরাই আমার উপরে হামলা করেছে। তৃণমূলের পার্টি অফিস ভাঙচুর করেছে। আসলে আমি এখানে থাকলে ওঁদের ‘ইনকাম’ বন্ধ হয়ে যাবে তাই চক্রান্ত করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। বিষয়টি জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষকে জানিয়েছি। তিনি চুপ থাকতে বলেছেন বলেই আমি পাল্টা প্রতিশোধ নিইনি।’’
মৃদুল অর্পিতার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সম্প্রতি অর্পিতা জেলা সভাপতি হওয়ার পরেই গঙ্গারামপুরে এই শ্রমিক নেতার ‘উদয়’ হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। সূত্রের খবর, মৃদুলকে গঙ্গারামপুরের আইএনটিটিইউসির দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি গঙ্গারামপুরের ঠিকাদার সংগঠনের দায়িত্বও তাঁকে দেওয়া হবে বলে খবর। এ জন্য মৃদুল চৌমাথা মোড়ে তাঁর অফিসকে তৃণমূলের পার্টি অফিস করার প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন।
মৃদুলের অভিযোগ, গঙ্গারামপুরের শ্রমিক ও ঠিকাদার সংগঠনগুলির রাশ তাঁর হাতে দেওয়ার খবর শহরে চাউর হতেই পুরপ্রধান, তাঁর ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারদের দিয়ে এই পরিকল্পিত হামলা করেছেন। তাঁর অভিযোগ, এ দিন সন্ধেয় হালদারপাড়ার ঠিকাদার গোকুল হালদার, শ্যাম হালদার, সুজিত হালদাররা প্রায় ৫০ জন দুষ্কৃতী নিয়ে তাঁর অফিসে এসে হামলা করে। মেরে তাঁর নাক ফাটিয়ে দেওয়া হয়। ইট, লোহার রড দিয়ে অফিস ভাঙচুর করা হয়। শহরের অন্যতম ব্যস্ততম মোড়ে এই ভাঙচুর, মারধরের ঘটনায় গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এ নিয়ে অমলের প্রতিক্রিয়া জানতে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে গঙ্গারামপুরের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক তথা নেতা সত্যেন রায় বলেন, ‘‘এই ঘটনা অনভিপ্রেত। যা হয়েছে তাতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। জানি না এরা কার লোক। বিষয়টি নেতৃত্বকে জানিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’