—ফাইল চিত্র
শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তৃণমূলের দুরত্ব তৈরি হতেই উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের রায়গঞ্জ ডিপোয় কর্মরত দাদার (শুভেন্দুর) অনুগামীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। সেই সময় দাদার অনুগামীদের সঙ্গে কখনও পুলিশের, আবার কখনও ডিপোয় কর্মরত তৃণমূল কর্মীদের চাপানউতোর প্রকাশ্যে আসে। চলতি মাসের গোড়ায় তৃণমূল প্রভাবিত নিগমের চালক ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের তরফে ফ্লেক্স লাগিয়ে দাবি করা হয়, ইউনিয়নের সদস্যরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত। এ বার শুভেন্দু তৃণমূল ছাড়তেই দাদার অনুগামীদের গতিবিধির উপর কড়া নজর রাখা শুরু করেছেন ইউনিয়নের নেতারা। সব মিলিয়ে শুভেন্দুর অনুগামীদের সঙ্গে ইউনিয়নের নেতাদের চাপানউতোর চরমে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার দুপুরে ডিপো কার্যালয়ে শুভেন্দুর অনুগামীদের সঙ্গে ইউনিয়নের নেতাদের পাশাপাশি বসে দীর্ঘক্ষণ কথা বলতে দেখা যায়। সেখানে ছিলেন ইউনিয়নের অফিস সম্পাদক কৌশিক দে ও রায়গঞ্জ ডিপো সম্পাদক রতন বর্মণ। কৌশিক শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ অনুগামী বলে পরিচিত। ঘটনাচক্রে, যেদিন শুভেন্দু বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন, সে দিন কৌশিকও কলকাতায় ছিলেন। যদিও কৌশিকের দাবি, তিনি মেয়ের চিকিৎসার জন্য ওই দিন কলকাতায় ছিলেন। এ দিন ইউনিয়নের কার্যালয়ে রতনের সামনেই কৌশিক বলেন, “শুভেন্দুদা আমাদের দফতরের মন্ত্রী ছিলেন। তিনি দীর্ঘ দিন জেলার (উত্তর দিনাজপুর) তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ছিলেন। শুভেন্দুদা আমাকে তাঁর ভাইয়ের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তাই শুভেন্দুদার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক লুকনোর কিছু নেই।’’
তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলার কার্যনির্বাহী সভাপতি কৌশিকের এমন মন্তব্যের পরেই ইউনিয়নের সদস্যরা ঠাট্টার ছলে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তোলেন, শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দিলে কৌশিকও কী অনুগামীদের নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেবেন? তখন কৌশিককে বলতে শোনা যায়, “বাম আমল থেকে আমি তৃণমূলে রয়েছি। কেউ আমাকে হাত ধরে তৃণমূলে ঢোকাননি। তাই বিজেপিতে যোগ দেওয়ার হলে আমাকে কারোর হাত ধরতে হবে না।” পরে অবশ্য কৌশিক বলেন, “শুভেন্দুদার সঙ্গে আমি ও আমার অনুগামীদের ভাল সম্পর্ক ঠিকই, তবে আমরা সকলে তৃণমূলেই রয়েছি। ভবিষ্যতে কী হবে, তা ভবিষ্যতই বলবে।”
রতন বলেন, “রায়গঞ্জ ডিপোয় কর্মরত ইউনিয়নের বেশির ভাগ সদস্য তৃণমূলে রয়েছেন। কিছু সদস্য ব্যক্তিগত ভাবে কারও অনুগামী হতেই পারেন। তাঁদের সবার উপরেই ইউনিয়নের নেতৃত্বের নজর রয়েছে।”