বাধা কাটাতে বাগানে পড়ে থাকবে তৃণমূল

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজাভাতখাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে থাকা কালকুটের বাসিন্দারাই এই প্রকল্প নিয়ে সব চেয়ে বেশি আপত্তি তুলেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:২৫
Share:

প্রশ্ন: তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি মোহন শর্মা শুক্রবার মাঝেরডাবরিতে সরস্বতী ওঁরাওয়ের প্রশ্নের মুখে পড়লেন। ছবি: নারায়ণ দে।

বাধা কাটিয়ে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান্টের কাজ বাস্তবায়িত করতে এ বার সেখানে শিবির করে পড়ে থাকার কথা জানালেন রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের নেতারা। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হল, চা বাগানের প্রস্তাবিত জমিতে প্রকল্পের কাজে ফের কেউ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে প্রশাসন কঠোর থেকে কঠোরতর ব্যবস্থা নেবে। তবে সভা শেষে প্রকল্প ঘিরে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয় তৃণমূল নেতাদের।

Advertisement

বুধবারের ঘটনার জেরে এ দিন মাঝেরডাবরি চা বাগানে নাগরিক কনভেনশন করার কথা ছিল তৃণমূল নেতাদের। কিন্তু বাস্তবে সেই কনভেনশন এ দিন কার্যত দলীয় সভায় পরিণত হয়। শাসক দলের এই কর্মসূচিকে ঘিরে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না হয়, সে জন্য এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু যাদের বোঝাতে তৃণমূলের এই কর্মসূচি সেই সাধারণ মানুষকে এ দিন বেশি সংখ্যায় সেখানে দেখা যায়নি বলে দাবি।

সেই সঙ্গেই স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজাভাতখাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে থাকা কালকুটের বাসিন্দারাই এই প্রকল্প নিয়ে সব চেয়ে বেশি আপত্তি তুলেছিলেন। এ দিনের সভায় সেই গ্রামের মানুষ খুব একটা যাননি বলেই স্থানীয় সূত্রে দাবি।

Advertisement

তবে এ দিনের সভা থেকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, ‘‘খুব শীঘ্রই ফের প্ল্যান্টের জন্য সীমানা পাঁচিল তৈরির কাজ শুরু হবে। এ বারও যদি কেউ সেই কাজ বানচাল করার চেষ্টা করেন, তা হলে প্রশাসন কঠোর থেকে কঠোরতর ব্যবস্থা নেবে।’’ একই সঙ্গে তিনি এও বলেন, বিজেপি নেতারা কিছু মানুষকে ভুল বুঝিয়ে এ ধরনের কাজ করাচ্ছে।

এ দিনের সভায় সব চেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি মোহন শর্মা। তাঁর সাফ কথা, “কিছু শক্তি উন্নয়ন চায় না। কিন্তু এখানে ফের এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সর্বত্র বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে জেলা স্তব্ধ করে দেওয়া হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনে প্রতি দিন দলের একশো জন নেতা-কর্মী শিবির করে চা বাগানে পড়ে থাকবেন।’’

তবে এ দিন স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তৃণমূল নেতাদের। প্রাণেশ রায় নামে এক যুবক নেতাদের প্রশ্ন করেন, প্রকল্পটি আসলে কী, সেটা কেন প্রশাসনের তরফে স্থানীয় বাসিন্দাদের বোঝানো হল না? বুধবারের ঘটনায় নিরাপরাধ বেশ কয়েক জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে অভিযোগ তুলে নেতাদের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সরস্বতী ওঁরাও নামে এক মহিলা। তৃণমূল জেলা শীর্ষ নেতৃত্ব অবশ্য বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। অন্য দিকে প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, একবার-দু’বার নয়, প্রকল্পটি নিয়ে বারবার স্থানীয় বাসিন্দাদের বোঝানো হয়েছে।

বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতারা আসলে তাঁদেরই সরকারের প্রশাসনকেও বিশ্বাস করেন না। তাই প্রকল্প এলাকায় নেতা-কর্মীদের দিয়ে পাহারা দেওয়ার কথা বলছেন।’’ তিনি বলেন, মানুষ সবই খেয়াল করছেন। তাই ঠিক সময় তার জবাবও দেবেন তৃণমূলকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement