প্রতীকী ছবি।
এ বারের পুরভোটে কোচবিহার জেলায় পুরপ্রধানকে ‘প্রজেক্ট’ করে লড়াইয়ের কথা আপাতত ভাবছে না তৃণমূল। দলের অন্দরের খবর, প্রাথমিক ভাবে ‘বোর্ড’ গঠনকেই পাখির চোখ করে এগোনোর ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া দলের কর্মীদের একাংশও পুরপ্রধানকে ‘প্রজেক্ট’ করে নির্বাচনে আপত্তির কথা দলের নেতাদের কয়েক জনকে জানিয়েছিলেন। সম্প্রতি কলকাতায় গিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে পুরভোট নিয়ে আলোচনাও করেন জেলা নেতারা। তা ছাড়া কোথায়, কে টিকিট পাবেন সে সব নিয়ে খোঁজখবর করছে ‘টিম পিকে’। সব মিলিয়েই এমন ভাবনা বলে দলীয় সূত্রে খবর।
সোমবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “কলকাতায় আছি। কে কী বলছেন জানি না। সম্ভাব্য চেয়ারম্যান নিয়ে আমরা এখনই কিছু ভাবছি না। আসন সংরক্ষণ তালিকা চূড়ান্ত হয়নি। প্রার্থী তালিকা হয়নি। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে পুরভোটে পদক্ষেপ করা হবে।”
কোচবিহারের ছ’টি পুরসভার মধ্যে চারটি পুরসভার মেয়াদ আগামী এপ্রিল-মে মাস নাগাদ শেষ হচ্ছে। ওই তালিকায় রয়েছে কোচবিহার, তুফানগঞ্জ, দিনহাটা ও মেখলিগঞ্জ পুরসভা। এ ছাড়াও জেলার মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ি পুরসভায় মেয়াদ ফুরোনোর আগেই প্রশাসক বসানো হয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী এপ্রিল নাগাদ একযোগে ছ’টি পুরসভাতেই নির্বাচন হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। সম্প্রতি একসঙ্গে জেলার চারটি পুরসভার খসড়া আসন সংরক্ষণ তালিকা প্রকাশ হয়েছে। তার জেরেই পুর নির্বাচনের প্রস্তুতি বেড়েছে বিভিন্ন দলের।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে ওই সব পুরসভার নির্বাচন শাসক দলের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকে। তার উপরে গত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার আসনে বিজেপি জয়ী হওয়ায় ‘চাপে’ রয়েছে শাসকদল। সব মিলিয়ে কর্মীদের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
দলের এক নেতার কথায়, “সার্বিক ঐক্যবদ্ধভাবে জোট করে পুরভোটে লড়াই পাখির চোখ হওয়া উচিত। কোন পুরসভায় কাউকে সম্ভাব্য পুরপ্রধান হিসেবে তুলে ধরে প্রচার হলে তাতে সমস্যা হতে পারে। আবার কোনও কারণে ওই প্রার্থী পরাজিত হলে পুরবোর্ড দখলে এলেও অস্বস্তিতে পড়তে হতে পারে। এ সব যুক্তিকে তুলে ধরে কর্মীদের একাংশের মধ্যেও এমন আলোচনা হচ্ছে।”
তৃণমূল সূত্রের খবর, গত বারের পুরভোটেও কোনও পুরসভায় সম্ভাব্য পুরপ্রধান পদে ঘোষিত ভাবে কাউকে তুলে ধরা হয়নি। তবে প্রার্থী তালিকা দেখে কিছু ক্ষেত্রে অনেকে অনুমান করেছেন। এ বারে তাই আগেভাগেই সতর্কতা নিতে হচ্ছে। প্রার্থী চূড়ান্ত করা, ভোটে জয়লাভ, বোর্ড গঠন নিশ্চিত করার পরে আলোচনা করে পুরপ্রধান বাছাইয়ের মতো বিষয়গুলিকে পরপর সাজিয়ে দেওয়ার কথাও হচ্ছে।
দিনহাটার তৃণমূলের পুরপ্রধান, বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মেনেই কাজ হবে।” কোচবিহারের তৃণমূল পুরপ্রধান ভূষণ সিংহ বলেন, “দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।”