—প্রতীকী চিত্র।
সব বুথে এজেন্ট দেওয়া যাবে তো! চিন্তা বিরোধীদের। শাসক দলের চিন্তা, বিক্ষুব্ধ-অভিমানী নেতা-কর্মীরা আজ কী করবেন? জলপাইগুড়ি জেলার ১৭০১টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের সব ক’টিতে প্রার্থী দিতে পারেনি কোনও বিরোধী দলই। ভোটের আগের দিন বিরোধী শিবিরের চিন্তা, যে বুথে প্রার্থী রয়েছেন, সেখানকার ভোটকেন্দ্রে দলের এজেন্ট মিলবে তো?
বিজেপি সূত্রের দাবি, কিছু এলাকায় শেষ মুহূর্তে প্রার্থী দিতে পারলেও, দক্ষ এজেন্ট পাওয়া যাচ্ছে না। কোনও কোনও গ্রাম পঞ্চায়েতে একাধিক বুথ রয়েছে, তাদের সব ক’টিতে পুরো সময়ের জন্য এজেন্ট দেওয়া সম্ভব নয় বলে মেনে নিয়েছেন কংগ্রেসের একাধিক নেতা। বামেদের দাবি, কিছু জায়গায় দলের এজেন্টদের আগে থেকেই ভয় দেখানো হচ্ছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য বলেন, “যাঁদের ভয় দেখানোর, ভয় দেখাবেন। যাঁদের ভয় না পাওয়ার, তাঁরা পাবেন না। জনগণ এ বার সঙ্গে আছে। ভয়কে জয় করবেন কর্মীরা।”
তৃণমূলের চিন্তা অন্য। বৃহস্পতিবার প্রচার শেষের আগে ব্লকের দলীয় পর্যবেক্ষকেরা গিয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। ভোটের এক রাত আগে ফের ‘বিক্ষুব্ধ’ এবং ‘অভিমানী’ নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন দলের নেতারা। তাতে কতটা কাজ হল, তা নিয়ে চিন্তায় দল। যেমন, ডুয়ার্সের এক চা শ্রমিক নেতা বৃহস্পতিবার রাতের বৈঠকে নেতৃত্বকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর পক্ষে ভোটের কাজ করা সম্ভব নয়। গভীর রাত পর্যন্ত তাঁকে বোঝাতে দলীয় নেতারা পাহড়ি জনপদে বৈঠক করেন।
ময়নাগুড়ির এক প্রভাবশালী নেতার বাড়ির আশপাশে বা পাড়ায় তৃণমূলের পতাকা নেই, শুধু নির্দলের পোস্টার-ব্যানার। সে খবর পেয়ে রাজ্যের এক প্রাক্তন মন্ত্রী গিয়েছিলেন সে নেতার সঙ্গে বৈঠক করতে। সূত্রের দাবি, তার পরেও ওই নেতাকে ডাকলে পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও ওই নেতার এলাকায় নির্দল প্রার্থীরা ভোটের ঠিক আগে, দেদার টাকা, সক্রিয় প্রচার-পরিকল্পনা এবং লোকবল কোথা থেকে পেলেন, সে প্রশ্নে কপালে ভাঁজ তৃণমূল নেতৃত্বের।
ক্ষোভ-অভিমান ছাড়াও, তৃণমূলকে চিন্তায় রাখছে বিস্তৃত চা বলয়। যেখানে আশা দেখছে বিজেপি। সৌজন্যে সঙ্ঘ পরিবার। সঙ্ঘ পরিবারের ‘জমিতে’ পঞ্চায়েত ভোটের ফল তুলতে ঝাঁপিয়েছেন বিজেপি নেতারা। তাতে চাপ বাড়িয়েছে ‘বিক্ষুব্ধ’ তৃণমূল। বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “তৃণমূলকে হারাতে দলমত নির্বিশেষ বিজেপিকে সমর্থন করছেন অনেকে।” বিজেপির দাবিকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়েছে তৃণমূল। যে সব এলাকায় ক্ষোভ-অভিমান ছিল, সেখানে বেছে বেছে জলপাইগুড়ি জেলায় তৃণমূলের সংগঠন দেখার দায়িত্ব পাওয়া শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব সভা-বৈঠক করেছেন। চা বলয়ের নেতাদের সঙ্গেও বসেছেন। গৌতম দেব বলেন, “সব নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সকলেই দলের হয়ে লড়বেন। কোনও ভুল বোঝাবুঝি নেই। জলপাইগুড়ির ফল নিয়ে আমি আশাবাদী।’’