—ফাইল চিত্র।
ভূষণ-কাঁটায় অস্বস্তিতে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়। সোমবার দলের কোচবিহার জেলা পার্টি অফিসে টাউন মণ্ডলের সভাপতি নিরঞ্জন দত্তকে পাশে বসিয়ে তিনি বলেন, “দলে কোনও দ্বন্দ্ব নেই।” তা হলে ভূষণ সিংহ কেন আপনার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন? পার্থপ্রতিম বলেন, “দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরে কিছু বলব না।”
ভূষণ কোচবিহার পুরসভার প্রশাসক। দিন কয়েক আগে রাসমেলার মাঠে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভামঞ্চে তাঁকে উঠতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তার পরেই ভূষণ অভিযোগ করেন, দলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম বিজেপির সুবিধা করে দিতে কাজ করছে। তাঁকে কোচবিহার শহরে কোনও কর্মসূচি করতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি পার্থপ্রতিমের সম্পত্তি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। রবিবার ভূষণ পুরসভার ওয়ার্ড কমিটির কর্মী-নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে জানিয়ে দেন, ৭ দিনের মধ্যে ওয়ার্ড কমিটি গঠন না হলে তাঁরা দল থেকে বসে যাবেন।
এ দিনের বৈঠকে ছিলেন টাউন মণ্ডলের সভাপতি নিরঞ্জন দত্ত। তিনি বলেন, “আমরাও চাই দ্রুত ওয়ার্ড কমিটি গঠন হোক। দল থেকে বসে যাওয়ার কোনও ব্যাপার নেই।” পাল্টা ভূষণ বলেন, “দলের সংগঠন ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে। কমিটি না থাকায় কোনও কর্মসূচি করতে পাচ্ছি না।” টিম পিকের কাজ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন ভূষণ। তা নিয়ে পার্থ এ দিন বলেন, “আমাদের সহযোগী হিসেবে পিকে টিম কাজ করছে। অভাবনীয় কাজ হচ্ছে। সব কিছু দলনেত্রীর নির্দেশে হচ্ছে। আমরা সবাই আত্মবিশ্বাসী ২০০ উপরে আসন পাব।” তবে ভূষণের মন্তব্য নিয়ে সরাসরি কিছু বলতে চাননি তিনি।
তাঁর পাশে বসে থাকা আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, “আমরা খুব শীঘ্রই কোর কমিটির বৈঠক করব। সেখানে সমস্ত বিষয়ে আলোচনা হবে। তাতে সমস্ত কিছুই মিটে যাবে। তা নিয়ে বাইরে মন্তব্য করার প্রয়োজন নেই।”
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারে তৃণমূলের লাগাতার ‘দ্বন্দ্বে’ রাজ্য নেতৃত্ব খুশি নয়। কিছুদিন আগেই বিধায়ক মিহির গোস্বামী বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তিনিও একই ভাবে জেলা নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন। এ বারে ভূষণও বেসুরো। রাজ্য নেতৃত্ব দ্রুত দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। দলেরই এক নেতার কথায়, ‘‘এই সময় যেখানে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন, সেখানে দলের নেতারাই এক হতে পাচ্ছেন না, মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেওয়ার পরেও এমন হচ্ছে। রাজ্য নেতৃত্ব তা ভাল চোখে দেখছেন না।”