—প্রতীকী চিত্র
এনআরসি নিয়ে দল যে বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণে যাচ্ছে কোচবিহার সফরে এসে সে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজবাড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের দলীয় কর্মিসভার মঞ্চ থেকে তিনি সরাসরি জানিয়েছিলেন, বাংলায় এনআরসি হবে না। তাঁর ওই বার্তার পরে কোমর বেঁধে ময়দানে নামার প্রস্তুতি নিয়েছে দলের কর্মী-সমর্থকরা। শুধু দল নয়, সেই সঙ্গেই একাধিক সামাজিক ও গণসংগঠনকেও মাঠে নামিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। দলীয় সূত্রের খবর, এনআরসি নিয়ে ছোট ছোট সভা ও বৈঠক করছে ওই সংগঠনগুলো।
রাজ্যের অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ জানান, বুথে বুথে এনআরসি নিয়ে প্রচারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “এনআরসি নিয়ে দলীয় ভাবে আমরা প্রচারে নেমেছি। নাগরিকত্ব বিলের কথা বলা হচ্ছে। তা মানুষের সামনে একটি বড় বিপদ। অসমে কী হচ্ছে, তা আমরা সবাই দেখছি। তাই সবাই মিলেই এনআরসির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে।”
তৃণমূল প্রচার করছে, তৃণমূল সরকারে থাকলে এনআরসি হবে না। বিজেপি সরকার গঠন করলে ছয় বছরের জন্য নাগরিকত্ব হারাতে হবে সাধারণ মানুষদের। তার পরে কী হবে, তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারবে না। সেই প্রায় একই সুরে ইতিমধ্যেই দিনহাটায় সভা করেছে ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণমঞ্চ। সেখানে হাজির ছিলেন রাজ্য সরকারের মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। বৃহস্পতিবার নিশিগঞ্জে জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দ জনসভা করে এনআরসি-র বিরুদ্ধে সওয়াল করে। সেখানে রাজ্য সরকারের আরেক মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী হাজির ছিলেন।
এমনই একাধিক ছোট-বড় সংগঠন এনআরসি নিয়ে পথে নেমেছে। দল মনে করছে, অসম লাগোয়া হওয়ায় এনআরসি’র প্রভাব সরাসরি কোচবিহার তথা উত্তরবঙ্গে পড়েছে। এবারে লোকসভায় উত্তরবঙ্গেই সব থেকে খারাপ ফল করে তৃণমূল। আটটি আসনের মধ্যে একটিও তৃণমূলের ঝুলিতে পড়েনি। এই অবস্থায় নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে এনআরসি ইস্যুকেই কাজে লাগাতে চাইছে দল।
প্রচারে সাফল্যও মিলছে বলে তৃণমূলের নেতাদের একাংশের দাবি। এক নেতার কথায়, “অসমের মানুষের বিপদের কথা উত্তরবঙ্গে মানুষের মুখে মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যা পুরোপুরি বিজেপির বিপক্ষে গিয়েছে। তা আমাদের পক্ষে ভাল হয়েছে।” বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “কিছু মিথ্যে ও বিভ্রান্তমূলক প্রচার করে মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে তৃণমূল।’’