প্রতীকী ছবি।
মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের মুখে আলিপুরদুয়ারে বন্ধ বাগান খোলা নিয়ে দলের অস্বস্তি বাড়াল তৃণমূলেরই চা শ্রমিক সংগঠন। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে একের পর এক বন্ধ চা বাগান খুলতে শুরু করেছে আলিপুরদুয়ারে। যার পিছনে ইতিমধ্যেই ‘ভোট রাজনীতি’র গন্ধ খুঁজে পেতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। তাঁদের সঙ্গে সহমত পোষণ না করলেও দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর মুখ্যমন্ত্রীর সফরের মুখে খুলতে শুরু করা একের পর এক চা বাগানের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব বেশি আশার আলো দেখছেন না তৃণমূল চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারাও। ফলে অস্বস্তিতে শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ।
টানা একুশ মাস বন্ধ থাকার পর দিন কয়েক আগে খুলে যায় মাদারিহাট ব্লকের মুজনাই চা বাগান। মালিক-শ্রমিক বিবাদের জেরে প্রায় এক বছর বন্ধ থাকার পর রবিবার খুলে যায় কালচিনি ও রায়মাটাং চা বাগানও। উত্তরবঙ্গের অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার মহম্মদ রিজওয়ান বলেন, ‘‘শ্রমিকদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে কালচিনি ব্লকের বন্ধ তোর্সা চা বাগানও দ্রুত খোলার চেষ্টা চলছে।’’
আলিপুরদুয়ারে মালিক-শ্রমিক বিবাদের জেরে বাগান বন্ধ হওয়ার সমস্যা নতুন নয়। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনে চা বলয় অধ্যুষিত আলিপুরদুয়ারে ভরাডুবি হয় তৃণমূলের। বিরোধীদের অভিযোগ, মাঝেমধ্যেই বাগান বন্ধ হওয়ার ঘটনাকে যে শ্রমিকরা ভাল চোখে নেন না, তা লোকসভা নির্বাচনে বুঝিয়ে দিয়েছেন জেলার চা বলয় এলাকার ভোটাররা। বিজেপি সাংসদ জন বার্লার অভিযোগ, “এই অবস্থায় শ্রমিকদের কাছে পেতে আবার একটা নির্বাচনের আগে বাগান খোলার নাটক শুরু করেছে শাসকদল। আমরা নিশ্চিত, ভোটের পর আবার যা হওয়ার, তাই হবে।” একই আশঙ্কা বামপন্থী চা শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের একাংশেরও। ইউটিইউসি-র ডুয়ার্স চা বাগান ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সম্পাদক গোপাল প্রধানের কথায়, ‘‘বাগানগুলি যাতে ভবিষ্যতেও খোলা থাকে সেদিকে রাজ্য সরকারকে কড়া নজর রাখতে হবে।’’
তবে শাসকদলকে অস্বস্তিতে ফেলে চা বাগান তৃণমূল মজদুর ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অসীম মজুমদার বলেন, “কালচিনি, রায়মাটাং বাগানের মালিকানা পরিবর্তনের পর দশ বছরে কোনও কারণ ছাড়াই সাতবার তা লকআউট হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গে আসার আগে মন্ত্রী ও শ্রম দফতরের চাপে মালিকপক্ষ ফের একবার বাগান খুললেন ঠিকই, কিন্তু আমি খুব আশাবাদী নই। সরকারের আরও বেশি নজর রাখা উচিত।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, “আমাদের সরকারে লক্ষ্য বন্ধ চা বাগান খোলা। এতে বিরোধীদের গাত্রদাহ হবে সেটাই স্বাভাবিক। তবে আমাদের দলের কেউ কিছু বললে, তাঁরা সবটা না জেনে-বুঝেই বলছেন বলে মনে হয়।”