হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ তৃণমূল কর্মী আজিজুল রহমান (ডানদিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে আবারও উত্তপ্ত কোচবিহারের দিনহাটা। দুষ্কৃতীদের গুলিতে গুরুতর জখম হলেন এক তৃণমূল প্রার্থীর স্বামী। সোমবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে দিনহাটার গীতালদহ গ্রামে। আহত তৃণমূল কর্মীর স্ত্রী এই ঘটনায় আঙুল তুলেছেন বিজেপির দিকে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে গেরুয়া শিবির। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গুলিতে জখম ব্যক্তির নাম আজিজুল রহমান। তাঁর স্ত্রী ডলি খাতুন এ বার পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন। আজিজুল নিজেও তৃণমূল করেন। সোমবার সন্ধ্যায় দলীয় বৈঠক শেষে করে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সেই সময়ই তাঁকে লক্ষ্য করে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা গুলি ছোড়ে বলে অভিযোগ। একটি গুলি এসে লাগে আজিজুলের পায়ে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করান তৃণমূল কর্মীরা। কিন্তু আহতের শারীরিক পরিস্থিতি দেখার পর সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে তড়িঘড়ি কোচবিহারের সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেছেন। অন্য দিকে, ভরসন্ধ্যায় এই গুলি চলার ঘটনায় এলাকায় আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়েছে পুলিশ।
এই গুলি চলার ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তথা জেলা পরিষদের তৃণমূল প্রার্থী নুর আলম হোসেন বলেন, ‘‘এই ঘটনার পিছনে বিজেপির হাত থাকতে পারে। কারণ, বিজেপি এখানে প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না। তারা নির্দল প্রার্থী দাঁড় করানোর মতলব করছে। তাদের মদতেই কিছু দুষ্কৃতী গুলি চালিয়েছে।’’ একই অভিযোগ করেছেন আজিজুলের স্ত্রী ডলি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এই ঘটনায় বিজেপি জড়িত বলে আমার সন্দেহ।’’
সমস্ত অভিযোগ করেছে গেরুয়া শিবির। কোচবিহারের বিজেপির জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘তৃণমূল গোষ্ঠীকোন্দলের ফলেই এই কাণ্ড ঘটেছে। তৃণমূল একদলকে টিকিট দিয়েছে। আর একদলকে টিকিট পায়নি। এখন কোন প্রতীকে বিক্ষুব্ধ প্রার্থীরা লড়বেন, তা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে তৃণমূলে। আবার বিক্ষুব্ধ প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে হবে, তার জেরেও গন্ডগোল শুরু হয়েছে। আর তারা সেই গন্ডগোলের দায় চাপাচ্ছে বিজেপির উপর।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘গতকাল (রবিবার) আমাদের এক কর্মীকে তাঁরাই খুন করেছে। আজ নিজেরাই নিজেদের মধ্যে গন্ডগোল পাকাচ্ছে।’’
উল্লেখ্য, দিনহাটায় বিজেপি প্রার্থীর দেওর খুনের ঘটনায় রাজনীতির কোন সম্পর্ক নেই বলে সোমবার দিনহাটা থানায় সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দেন কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার। সোমবারের গুলি চালানোর ঘটনা প্রসঙ্গে কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সানি রাজ বলেন, ‘‘গীতালদহের স্কুল থেকে রাজনৈতিক দলের বৈঠক সেরে ফেরার পথে আজিজুল হক নামে একজনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর মিলেছে। আরিফ হোসেন নামেও একজন আহত হয়েছেন বলে খবর। তাঁর মুখে আঘাত লেগেছে। ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’’