ছবি: সংগৃহীত
বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষ জোটের কথা একাধিকবারই বলেছেন তৃণমূলনেত্রী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে অনেকই ক্ষেত্রে সব বিরোধী দল মতান্তর সরিয়ে এক ছাতার তলায় আসতে পারেনি। কোচবিহারে অবশ্য দেখা গেল অন্য ছবি। বুধবার কোচবিহার বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে একযোগে লড়ল তৃণমূল-সিপিএম। তাঁদের সঙ্গে জোটে ছিল কংগ্রেসও। দলের প্রতীকে লড়াই না হলেও ‘মহাজোট’ নিয়েই চলল চর্চা।
রীতিমতো লিফলেট বিলি করে ‘মহাজোটে’র কথা প্রচার করেছেন তিন দলের সমর্থক আইনজীবীরা। ওই পক্ষে সভাপতি পদে দাঁড়িয়েছেন আব্দুল জলিল আহমেদ। তিনি তৃণমূলের কোচবিহারের জেলা নেতা হিসেবেই পরিচিত। সম্পাদক পদে দাঁড়িয়েছেন অশোক ঘোষ। তিনি কংগ্রেস নেতা হিসেবে পরিচিত। আবার এগজিকিউটিভ সদস্য হিসেবে দাঁড়ানো দেবজ্যোতি গোস্বামী ডিওয়াইএফ নেতা। জলিল আহমেদ বলেন, “ধর্মনিরপেক্ষ জোট তৈরি করেছি আমরা। এ কথা অস্বীকারের জায়গা নেই আমরা সবাই এক হয়েছি। আমাদের সঙ্গে বাম ও কংগ্রেস মনোভাবাপন্ন আইনজীবীরা রয়েছেন। সবাই ধর্মনিরপেক্ষতার ক্ষেত্রে এক।”
দেবজ্যোতি অবশ্য দাবি করেছেন, বার নির্বাচনে তাঁরা রাজনীতিগত ভাবে ভাবছেন না। তিনি বলেন, “আদালতের বাইরে আমরা সবাই নিজের রাজনীতির কথা বলব। এখানে আমরা সবাই একজোট। বিশেষ করে সবাই যে আমরা মিলেমিশে একসঙ্গে থাকতে পারি সে বার্তা দেওয়া বড় ব্যাপার।” অনেকটা একইরকম দাবি করেন কংগ্রেসের নেতা হিসেবে পরিচিত বারের নির্বাচনে দাঁড়ানো মীর মোশারফ হোসেন। তাঁর কথায়, “সবাই আমাদের সঙ্গেই আছেন। আর আইনজীবীরা সবাই যাদের চেয়েছেন তাঁরাই নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন।”
এ দিন আদালত চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, দু’পক্ষের আইনজীবীরা রীতিমতো ক্যাম্প করে ভোটারদের হাতে ক্রমিক নম্বর তুলে দিচ্ছেন। ভোট দেওয়ার অনুরোধও রাখছেন প্রার্থীরা। বিজেপির প্যানেলে সভাপতি দাঁড়ানো কল্লোল বসু দাবি অভিযোগ করেন, গত দশ বছর কোনও নির্বাচন হয় না। প্রত্যেক বছর শুধু মনোনীত প্রার্থীরাই বহাল থাকেন। এ ছাড়া বারের কোনও উন্নয়নমূলক কাজ হয়নি। তিনি বলেন, “এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে দশ বছর ধরেই আওয়াজ তুলেছি আমরা। তাই এ বারে নির্বাচন হল। সে সব কথা তুলে ধরেছি। তৃণমূল-সিপিএম সব এক হয়েছে। আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলে যাব।”
ভোটের উত্তেজনার মধ্যেই ‘মহাজোট’ ঘিরেই চর্চা চলেছে দিনভর। আদালত চত্বরে তৃণমূল আইনজীবী সেলের এক নেতা মজা করে বলেন, “এ বারে আমরা ‘ইনক্লামাতরম’ স্লোগান তুলেছি।” গভীর রাত অবধি ভোট গণনা চলে।