হাতির পিঠে চড়ে বাঘশুমারির কাজ শুরু উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে। —নিজস্ব চিত্র।
গোটা দেশের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের জঙ্গলেও শুরু হল বাঘশুমারি। তিন দিন চলবে এই গণনার কাজ। তাই আপাতত জঙ্গলে পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়েছে। নেওড়াভ্যালির জঙ্গলে পাতা ট্র্যাপ ক্যামেরায় সম্প্রতি কয়েক বার বাঘের ছবি ধরা পড়েছে। ফলে এ বারের গণনায় উত্তরবঙ্গের জঙ্গলের বাঘের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশায় বনকর্মী এবং পশুপ্রেমী সংগঠনগুলির।
বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে বাঘ গণনার কাজ। গরুমারা, নেওড়াভ্যালি এবং চাপড়ামারির জঙ্গলে মোট ৩০টি দল এই গণনার কাজ করছে। বনকর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন পশুপ্রেমী সংগঠনের সদস্যরাও এই দলে রয়েছেন। হেঁটে, হাতির পিঠে এবং ট্র্যাপ ক্যামেরা ব্যবহার— এই তিন ভাবে হবে গণনা। পাশাপাশি মল সংগ্ৰহ, পায়ের ছাপও খতিয়ে দেখা হবে। পরিবেশপ্রেমীদের দাবি, গরুমারা জাতীয় উদ্যানে ২৪ বছর পর বাঘশুমারি শুরু হয়েছে। শেষ বার তা হয়েছিল ১৯৯৮ সালে।
পরিবেশপ্রেমী শ্যামাপ্রসাদ পান্ডে বলেন, ‘‘সারা দেশের সঙ্গে গরুমারা ডিভিশনে বাঘ গণনা শুরু হয়েছে। নেওড়াভ্যালি, গরুমারা, চাপড়ামারিতেও গণনা হচ্ছে। ১৯৯৮ সালের পর এই প্রথম বার গরুমারাতে বাঘ গণনা করা হচ্ছে। আশা করছি বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।’’
জলপাইগুড়ির অবৈতনিক ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন সীমা চৌধুরী বলেন, ‘‘বাঘগণনা আগামী ৭ এপ্রিল শেষ হবে। আমরা আশাবাদী এ বার বাঘের সংখ্যা কিছুটা বাড়বে।’’
বন দফতরের তরফে নেওড়াভ্যালিকে এ বার বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ, সম্প্রতি নেওড়াভ্যালিতে কয়েক বার বাঘের অস্তিত্ব টের পাওয়া গিয়েছে। তাই গন্ডারের মতো বাঘের সংখ্যাও বাড়বে বলে আশাবাদী বনাধিকারিক থেকে পশুপ্রেমীরা। বাঘশুমারির কারণে জঙ্গলে প্রবেশের ক্ষেত্রেও পর্যটকদের জন্য বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বেশ কিছু জঙ্গলে সাফারি এবং নজর মিনারে প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে প্রবেশের সময়েও বদল করা হয়েছে। মূর্তি জিপসি ওনার্স অ্যাসোশিয়েসনের সম্পাদক মজিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘বাঘ গণনার জন্য সকালে দু’টি শিফটে পর্যটকদের জঙ্গলে ভ্রমণ বন্ধ রাখা হয়েছে গরুমারা এবং চাপড়ামারিতে। আমরা পর্যটকদের জানিয়ে দিয়েছি। সকালে যে দু’টি শিফটে সাফারি হয় তা আপাতত বন্ধ থাকবে।’’