ত্রয়ী: বীথিকা রাভা (সামনে), মৌমিতা রায় (মাঝে), রুবিনা খাতুন (পিছনে)। নিজস্ব চিত্র
অভাব তার পরিবারের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু কঠোর অনুশীলন আর দেশের হয়ে খেলার অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে সম্বল করে জাতীয় নির্বাচকদের নজর কেড়ে নিয়েছে এক ছাত্রী। ময়নাগুড়ি ব্লকের পদমতি দুই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার হেলাপাকড়ির মেয়ে মৌমিতা রায়। আগামী ৮ ও ৯ জুলাই দিল্লিতে অনূর্ধ্ব ১৬ জাতীয় হ্যান্ডবল দলের খেলোয়াড় বাছাইয়ের জন্য যে ট্রায়াল হবে, তাতে ডাক পেয়েছে সে। রাজ্য থেকে আরও দু’জন আলিপুরদুয়ারের বীথিকা রাভা এবং উত্তর ২৪ পরগনার রুবিনা খাতুনও এই ট্রায়ালে ডাক পেয়েছেন।
দশম শ্রেণির ছাত্রী মৌমিতার হ্যান্ডবল জীবন শুরু হেলাপাকড়ির রাশ স্পোর্টস অ্যাকাডেমির খেলোয়াড় হিসেবে। পরবর্তীতে অনুশীলনের জন্য কলকাতার সাই সেন্টারে যোগ দেন। মৌমিতার বাবা জগৎ রায় পেশায় রাজমিস্ত্রি, মা সংসার সামলান। চার বোনের মধ্যে তৃতীয় মৌমিতা। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারে হ্যান্ডবল চালিয়ে যাওয়াই একটা সময় কঠিন ছিল। কিন্তু মেয়ের প্রবল জেদের কাছ হার মানতে হয়েছে বাবা-মাকেও। শনিবার মেয়েকে নিয়ে দিল্লি যাওয়ার জন্য ট্রেনে রওনা দিলেন জগৎবাবু। তখন তিনি জানালেন, দেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখত মেয়ে। এখন তার থেকে মাত্র এককদম দূরে সে। ট্রায়ালে মনোনীত হলেই জাতীয় হ্যান্ডবল দলের সদস্য হয়ে যাবে মৌমিতা।
মৌমিতার সাফল্যের খবরে খুশি হেলাপাকড়ির সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাশ স্পোর্টস অ্যাকাডেমির সদস্যরাও।
অ্যাকাডেমির সভাপতি নুর এবনে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘হেলাপাকড়ির মতো প্রত্যন্ত এলাকা থেকে মৌমিতা ট্রায়ালে ডাক পাওয়ায় আমরা সবাই খুব খুশি।’’ মৌমিতার এই সাফল্য আগামিদিনে অ্যাকাডেমির অন্য খেলোয়াড়দেরও অনুপ্রাণিত করবে বলে তিনি জানান।
অন্য দিকে, কলকাতা সাইয়ের হ্যান্ডবল কোচ অতনু মজুমদার টেলিফোনে জানান, সাইয়ের তিন জন খেলোয়াড় জাতীয় দলের ট্রায়ালে ডাক পেয়েছেন। তারা জাতীয় দলে সুযোগ পাবেন বলে তিনি আশাবাদী।