গ্যাসের দাম বেড়েছে। তাই উজ্জ্বলা গ্যাসের সিলিন্ডার কেনার ক্ষমতা নেই। ওঁরা ফিরেছেন উনুনে। মালদহের কাজিগ্রামে। নিজস্ব চিত্র।
বয়স হয়েছে। শ্বাসকষ্টের সমস্যাও বেড়েছে। একমাত্র মেয়ের বিয়ের পর আম বাগান থেকে জ্বালানি কাঠ জোগাড় করে উনুনে রান্না আর করতে পারছিলেন না। বিনা পয়সায় উজালা যোজনায় রান্নার গ্যাস মিলছে জানতে পেরে বছর খানেক আগে বাড়িতে এনেছিলেন। এই কয়েক মাসে মাত্র একবার সিলিন্ডার পাল্টেছেন। রান্নার গ্যাসের দাম লাগাতার বাড়ায় আর সিলিন্ডার কিনতে পারেননি। তাই গত দু’মাস ধরে ফের সেই সাবেকি জ্বালানি কাঠ দিয়ে উনুনের রান্নাতেই ফিরে গিয়েছেন মালদহের কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের জগদীশবাটির কবিতা মণ্ডল। রান্নার গ্যাসের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে মালদহ জেলার প্রায় কয়েক হাজার পরিবার সিলিন্ডার কিনতে না পেরে ফের জ্বালানী কাঠ দিয়ে রান্নাতেই ফিরছেন। ফলে উজালা যোজনা প্রকল্পও এখন প্রশ্নের মুখে।
গ্যাস ডিস্ট্রিবিউটর সূত্রে খবর, গত এক বছরে মালদহে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম বেড়েছে ২৪৩ টাকা ৫০ পয়সা। গত ডিসেম্বরেই ১৫ দিনে তিন বার দাম বাড়ে। আর চলতি বছরের সাত মাসে দাম বেড়েছে ১৪০ টাকা ৫০ পয়সা। কিন্তু সেই তুলনায় রান্নার গ্যাসে সরকারি ভর্তুকি কিন্তু বাড়েনি। জানা গিয়েছে, গত বছরের জুনে সিলিন্ডারের দাম ছিল ৬৮৮.৫০ টাকা ও ভর্তুকি দেওয়া হয় ৭৫.৭৬ টাকা। এ বছরের জুলাই মাসে সিলিন্ডারের দাম হয়েছে ৯৩২ টাকা। কিন্তু ভর্তুকি হয়েছে ৭৮.৭৬ টাকা। গ্রাহকরা বলছেন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সঙ্গে রান্নার গ্যাসের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধির জেরে শোচনীয় পরিস্থিতি। জেলা তৃণমূল সভাপতি মৌসম নুর বলেন, ‘‘কেন্দ্র সরকারের ব্যর্থতাতেই মানুষের জীবন-জীবিকা পালনে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়।’’ বিজেপির উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মু অবশ্য বলেন, ‘‘গ্যাসের দামের সঙ্গে কেন্দ্র সরকারের কোনও যোগ নেই।’’