n জখম: সোমবার দু’বেলা মার খেলেন এই ব্যক্তি।
সোমবার সকাল থেকে বিকেল, কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দু’বার মার খেলেন এক ব্যক্তি। সোমবার সকালে ও বিকালে আলিপুরদুয়ার জংশন ও বীরপাড়ায় ঘটে যাওয়া গণপিটুনির দু’টি ঘটনাকে ঘিরে এই প্রশ্ন দানা বাঁধল আলিপুরদুয়ারে।
সোমবার সকালে আলিপুরদুয়ার জংশনের ভোলারডাবরির শালবাগান এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে তাঁর নিজের ছেলের সামনে গণপিটুনি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, ছেলেকে নিয়ে বিহার থেকে মালিগাঁও যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু ভুল করে আলিপুরদুয়ার জংশনে নেমে পড়েন। এর পর ঘুরতে ঘুরতে শালবাগান এলাকায় গেলে ছেলেধরা সন্দেহে স্থানীয়রা তাঁকে গাছে বেঁধে পেটাতে শুরু করে। খবর পেয়ে জংশন ফাঁড়ির পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। পুলিশ সূত্রের খবর, সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এর পরে বিকেলে বীরপাড়ার দলগাঁও স্টেশনে ছেলেধরা সন্দেহে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দেওয়ার খবর পাওয়া যায়। অভিযোগ, সেই সময় স্টেশনে থাকা লোকজনের পাশাপাশি ট্রেনের ভিতরকার যাত্রীরা ওই ব্যক্তিকে পেটান। আরপিএফ তাঁকে উদ্ধার করে হাসিমারায় নিয়ে যায়। ঘটনাচক্রে দেখা যায়, সকালে আলিপুরদুয়ার জংশনে মার খাওয়া ব্যাক্তির সঙ্গে ওই ব্যক্তির চেহারার অনেকটাই মিল রয়েছে। ফলে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন দানা বাঁধে, তবে কি গুয়াহাটির বদল অন্য ট্রেনে চেপে বীরপাড়ার দলগাঁও স্টেশনে চলে গিয়েছেন সকালের লোকটি? এবং সেখানে ফের ছেলেধরা সন্দেহে তাকে মারধর করা হয়?
রাতের দিকে অবশ্য পুলিশ জানায়, দু’জন আসলে একই ব্যক্তি। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘সকালে গণপিটুনির শিকার হওয়া ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর, এনজেপি-র ট্রেনে তুলে দেওয়া হয়। শুনেছি পরে আবার ওই ব্যক্তিকেই বীরপাড়ার দলগাঁও স্টেশনে ছেলেধরা সন্দেহে মারধর করা হয়েছে। আরপিএফ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেছে। বীরপাড়া থানার ওসিকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে।’’
এর আগে রবিবার রাতেও এই জেলায় একটি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন থেকেই আলিপুরদুয়ার জংশন এলাকার বেশ কিছু জায়গায় ছেলেধরা গুজব জাঁকিয়ে বসেছে। এই অবস্থায় রবিবার রাত এগারোটায় অপরিচিত এক বৃদ্ধকে বাদলনগর এলাকায় দেখা যায়। অভিযোগ, একটি বাড়ির শৌচাগারের ঢুকে পড়েন তিনি। স্থানীয় এক মহিলা তাঁকে দেখতে পেয়ে চিৎকার করেন। তখন লোকজন বেরিয়ে এসে তাঁকে ছেলেধরা সন্দেহে পেটাতে শুরু করে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিতে পারে ওই বৃদ্ধের নাম শশী সরকার। ৬৮ বছরের ওই বৃদ্ধের বাড়ি বারোবিশায়।