কাজের উদ্দেশ্যে ভিনরাজ্যে যাওয়া এই জেলায় নতুন নয়। কারখানা নেই এলাকায়। তাই কেউ দিল্লি, কেউ মুম্বই, কেউ বা গুজরাত, আমদাবাদের মতো শহরে কাজ করে থাকেন। এলাকায় সুযোগ থাকলেও কারখানা গড়ে ওঠেনি কেন, তা নিয়ে ক্ষোভ জমছে বাসিন্দাদের মধ্যেই।
রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানি এলাকার যুবকদের কর্ম সংস্থানের জন্য ভিনরাজ্যে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েই বলেন, ‘‘বাম আমলে রাজ্যের সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী শিল্পের জন্য বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। এলাকায় যদি কোনও ব্যবসায়ী শিল্পের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন, আমাদের সরকার তাঁকে সব রকম সহযোগিতা করবেন। আমরা সকলকেই আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’’
উত্তর দিনাজপুরের পাঞ্জিপাড়ার চামড়া ব্যবসা শুধু রাজ্যই নয় উত্তর পূর্ব ভারতেরও একটি বড় ব্যবসার মধ্যে পড়ে। চর্ম ব্যবসায়ীদের দাবি, ওই ব্যবসায় যুক্ত রয়েছেন এলাকার ব্যবসায়ীরা বাদেও আরও এক হাজার লোক। সেখান থেকে রাজ্য, রাজ্যের বাইরেও চামড়া যায়। ধনতলায় একটি চর্ম শিল্প করার পরিকল্পনা নেওয়া হলেও তা এখন পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন। চারিদিকে ঘেরা জায়গাটির প্রাচীর ভেঙে ইট চুরি হয়েছিল অনেক আগেই। এখন সেখানে বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির একটি পাওয়ার প্ল্যান্ট বসেছে। কাজেই নতুন করে চর্ম শিল্প করার নতুন জায়গা দেখতে হবে সরকারকে। তবে চামড়া থেকে নানা সামগ্রী প্রস্তুত করতে পারলে এলাকায় কর্ম সংস্থান বাড়ার আশা অনেক গুণ।
অন্য দিকে, ইসলামপুরের শ্রীকৃষ্ণপুর এলাকায় অধিগৃহীত রয়েছে শিল্প তালুকের জন্য জায়গা। প্রায় ১৬.৮ একর জায়গা নিয়েই ওই এলাকাটি অবস্থিত। প্রায় আট মাস আগে ওই এলাকার শিল্প তালুকে ক্ষুদ্র শিল্প করার বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে দেখা গেলেও আজও তা অথৈ জলে। চোপড়া সহ বিধানগর এলাকায় আনারস চাষ ভাল হয়। কাজেই এই এলাকায় প্রক্রিয়াকরণ শিল্প হতেই পারত বলে দাবি বাসিন্দাদের। কিন্তু তা গড়ে ওঠেনি। শিল্প তালুকের মধ্যেই প্রায় ৫৪টি খালি প্লট রয়েছে। কাজেই সেখানে বেশ কিছু শিল্প করার যেতেই পারে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। কিন্তু লিজের সময় সীমা মাত্র ৩৩ বছর। সরকারি ভাবে জমির দামটাও বেশি। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক আয়েশা রানির দাবি, শিল্প তালুক করা নিয়েই এর আগে সেখানে বৈঠক করা হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা ক্ষুদ্র শিল্প করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করলেই সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইসলামপুরের মার্চেন্ট অ্যাসোশিয়েশনের মুখপাত্র দামোদর অগ্রবালের দাবি, প্রশাসন মুখেই বলছে লিজ বাড়ানোর বিষয়। কিন্তু বাস্তবে কাগজে কলমে কিছুই মেলেনি। সরকার লিজের সময়সীমা ৯৯ বছর করলে অনেক যুবক যুবতী ঋণ নিয়েই ব্যবসা করতে পারবে।