—প্রতীকী ছবি।
মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের মতো বড় দুটি পরীক্ষায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ এ বছর গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা নিয়েছে। সময় এগিয়ে আনা এবং মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্রে প্রশ্ন ফাঁস রুখতে ‘কিউআর কোড’ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরেও প্রশ্ন ফাঁসের চেষ্টা রোখা যায়নি। মাধ্যমিকে মালদহে মোবাইল নিয়ে পরীক্ষার হলে ঢোকা এবং পরীক্ষার আগে প্রশ্ন বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে।
প্রশ্ন ফাঁস করার এই মানসিকতা কিন্তু এক দিনের নয়। বছরে পরে বছর এমন অভিযোগ উঠছে। কিছু পড়ুয়া এ ধরনের কাজে যুক্ত থাকতে পারে। তা রোখার কাজ বা সেই মানসিকতা যাতে তাদের ভিতরে তৈরি না হয়, সে জন্য সচেতনতা গড়ে তোলা জরুরি। এতে অভিভাবক এবং পরিবারকে যেমন পড়ুয়া সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে, তেমনই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও পড়াশোনার সঙ্গে পড়ুয়ার চরিত্র গঠনে নজর দিতে হবে। স্কুলে যদি যথাযথ ভাবে তাদের অনুপ্রাণিত করা যায়, তা হলে বোধ হয় অনেকটা সুরাহা মিলতে পারে। কেউ ভুল পথে গেলে, নিয়ন্ত্রিত শাসন জরুরি। সেটার অভাব হচ্ছে। আমাদের অনেকের মধ্যে সামাজিক দায়বদ্ধতার অভাব দেখা দিচ্ছে। সব মিলে, সামাজিক অবক্ষয় রোধ করতে হবে।
অনিয়ম করতে গিয়ে কোনও পরীক্ষার্থী ধরা পড়ে আগামী দিনে পরীক্ষা দিতে না পারলে ভবিষ্যতে নানা সমস্যায় পড়তে পারে। সে ভাবনা মাথায় রাখা দরকার। মোবাইল ব্যবহারে সাবধান থাকা জরুরি। প্রয়োজনের থেকে বেশি মোবাইল নাবালক পড়ুয়াদের ব্যবহার করতে দেওয়াও উচিত নয়। কারণ, মোবাইলের দিকে মাথা বেশি চলে গেলে, ভুল পথে যেতে পারে কোনও পড়ুয়া।
বেশ কিছু পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে যানজটের অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষার দিনে বাস, বাইক, গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকার ফলে ভোগান্তি হয়। সে ক্ষেত্রে সেই কেন্দ্রগুলি নিয়ে প্রশাসনকে আলাদা করে ভাবা প্রয়োজন। কারণ, বছরের পরে বছর পরীক্ষার দিনগুলিতে সে সব পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে পরীক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়বে, এটা মানা যায় না। কেন্দ্রগুলিকে অন্যত্র করা যায় কি না, ভাবতে হবে শিক্ষা দফতরকে। তবে অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা প্রশংসনীয়। বাস বা গাড়ি না পেয়ে যে পরীক্ষার্থীরা ঠিকঠাক সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে সমস্যায় পড়ছে, পুলিশ খবর পেলেই কিন্তু তাদের পৌঁছে দিচ্ছে। বিশেষ করে জঙ্গল এলাকার পরীক্ষার্থীদের জন্য বন দফতরের ভূমিকা প্রশংসনীয়। পরীক্ষার দিনগুলিতে হাতি রুখতে ‘ঐরাবত’ নামক বন দফতরের বিশেষ বাহিনী তৈরি রাখা হয়েছে। নিয়মিত টহল দিচ্ছেন বনকর্মীরা। জঙ্গল এলাকার পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা বাস কিংবা ছোট গাড়ি দেওয়ার ব্যবস্থাও ছিল।
(প্রধান শিক্ষিকা, শিলিগুড়ি দেশবন্ধু বিদ্যাপীঠ গার্লস হাই স্কুল)