—ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটে ডুয়ার্সের চা বলয়ের ‘বিপুল’ সমর্থন পেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু তার পরে নাগরিকপঞ্জি নিয়ে রাজ্যের তিনটি বিধানসভা উপ নির্বাচনের ফল এবং নয়া নাগরিকত্ব আইন সেই সমর্থনে ক্ষয় তৈরি করেছিল বলে অনেকের দাবি। যদিও বিজেপি মঙ্গলবার দাবি করেছে, তাদের মিছিলে চা বাগান থেকে যত লোক হয়েছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে, জনসমর্থনে কোনও ক্ষয়ই হয়নি।
মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে দুপুরে দলের মিছিলের পরে বিজেপি এই দাবি করেছে। দলীয় সূত্রের খবর, তৃণমূল সোমবার উত্তরের চা বলয় বলে পরিচিত মালবাজার এবং আলিপুরদুয়ারে মিছিল করেছে। মালবাজারে চা শ্রমিকেরা মিছিলে যোগ দিলেও আলিপুরদুয়ারে চা শ্রমিকেরা প্রায় ছিল না বললেই চলে। এর পরেই তৃণমূলের তরফে চা বলয়ে নতুন করে শক্তি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে বিজেপির মিছিলে আলিপুরদুয়ার থেকে সাংসদ জন বার্লার নেতৃত্বে ভাল সংখ্যক চা শ্রমিক মিছিলে এসেছিলেন। তেমনই, জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন চা শ্রমিকেরা। বিজেপির দাবি দুই মিছিলের ছবি দেখলেই বোঝা যায়, রাজ্যের শাসকের থেকে এখনও চা বাগিচা এলাকায় কিছুটা হলেও এগিয়ে কেন্দ্রের শাসক দল। আবার শুধু ডুয়ার্স নয়, তরাই এলাকার থেকে চা শ্রমিক এবং একাংশ নেতৃত্বতে মিছিল যোগ দিতে দেখা গিয়েছে। জন বার্লা বলেছেন, ‘‘বাগানে বাগানে বিজেপিই শক্তিশালী। আগামী দিনে তা বারবার প্রমাণ হবে।’’
বিজেপি নেতারা বলছেন, ‘‘চা বাগান নিয়ে রাজ্য সরকারির ব্যর্থতার জেরেই পদ্মফুলের নীচে চা শ্রমিকেরা ভিড় করছেন। আবার ন্যূনতম মজুরি চালু না হওয়া, জমির পাট্টার মতো একাধিক বিষয় ঝুলে রয়েছে। এসবের বহিঃপ্রকাশই সঙ্গে রাজ সরকারের বিরোধিতায়।’’
জলপাইগুড়ির বিজেপি নেতাদের দাবি, ডুয়ার্স থেকে প্রচুর চা শ্রমিক এ দিন শিলিগুড়ির ‘মহামিছিলে’ যোগ দিয়েছিলেন। এই কৃতিত্ব বিজেপি নেতারা দাবি করলেও, নীল নকশা তৈরি করেছে সঙ্ঘই। জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপি সূত্রের খবর, চা শ্রমিকদের মিছিলে পাঠানোর দায়িত্বে ছিলেন সঙ্ঘের কয়েক জন কার্যকর্তা। জেলা বিজেপি নেতারা অবশ্য সঙ্ঘ নিয়ে মুখ খুলতে রাজি নন। বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর মন্তব্য, “মোদী এবং শাহের প্রতি চা শ্রমিকদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। তৃণমূল সেই আস্থা ভাঙতে পারবে না।”
সূত্রের খবর, রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের পাঁচটি শাখা সংগঠন এবং একটি প্রভাবিত সংগঠন ডুয়ার্সের চা বলয়ে কাজ করে। তার মধ্যে একল স্কুল অন্যতম। যেখানে আদিবাসী পড়ুয়াদের বিনা মূল্যে পড়াশোনা করানো হয়। এই স্কুলের শিক্ষকদের জনজাতি বাসিন্দাদের মধ্যে প্রভূত প্রভাব রয়েছে বলে সূত্রের দাবি। এই শিক্ষকদেরই সংগঠন তৈরির কাজে ব্যবহার করেছে সঙ্ঘ।