বাস টার্মিনাসে অপেক্ষায়। নিজস্ব চিত্র
আটকে পড়া ভিন্ জেলার শ্রমিকদের ফেরানোর জন্য বাসের ব্যবস্থা করছে শিলিগুড়ি প্রশাসন। অনেকক্ষেত্রে সেই ব্যবস্থা করার আগে কিছুদিনের জন্য শ্রমিকদের বিভিন্ন শেল্টার হোমে রাখা হচ্ছে। তারপরেও মাধেমধ্যেই উঠছে উদাসীনতার অভিযোগ। কখনও বাস টার্মিনাসে শ্রমিকদের দায়সারা ভাবে রাখার অভিযোগ উঠছে। কখনও শেল্টার হোমে দিনের পর দিন রেখে দিলেও বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে। এর ফলে অনেকেই অপেক্ষা না করে হাতে থাকা শেষ সম্বল দিয়ে বাস ভাড়া করে বাড়ি ফিরছেন। সেক্ষেত্রে তাঁদের থেকে বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ উঠছে বাস মালিকদের একটি অংশের বিরুদ্ধে।
বহু টাকা ভাড়া নিয়ে শিলিগুড়ি থেকে মালদহ, মুর্শিদাবাদ ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে বাস। এই বাসগুলিতে সামাজিক দূরত্ব মানা, শ্রমিকদের স্ক্রিনিং করা-এমন কোনও কাজই হচ্ছে না বলে অভিযোগ। শিলিগুড়ি মহকুমা প্রশাসন সূত্রে বলা হয়েছে, শ্রমিকদের অনেকে বাড়ি ফিরতে চেয়ে নিজেরাই বাস ভাড়া করছেন। তাঁরা অনুমতি চাইলে দেওয়া হচ্ছে। শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক সুমন্ত সহায় জানান, বেসরকারি বাসগুলিকে অনুমতি দেওয়ার সময় বাসে কত জন উঠছেন তা দেখা সম্ভব হয় না। তবে রাস্তায় যে পুলিশকর্মীরা দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁরা সেদিকে খেয়াল রাখছেন বলে জানান। অনেক শ্রমিককে বাড়ি ফেরাতে শেল্টারহোমে রাখা হয়েছে। তাঁদের আস্তে আস্তে নিজেদের ব্লকে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অল্প কয়েকটা দিনও অনেকে অপেক্ষা করতে চাইছেন না বলে জানাচ্ছেন মহকুমা প্রশাসনের কর্তারা।
মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘কোথাও ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে বলে কোনও শ্রমিক জানাননি। এমন অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব। পুলিশকেও বিষয়টি খতিয়ে দেখতে জানাব।’’
নর্থবেঙ্গল প্যাসেঞ্জার্স ট্রান্সপোর্ট ওনার্স কোঅর্ডিনেশন কমিটির সম্পাদক প্রনব মানি জানান, দক্ষিণবঙ্গের কোনও জেলা বা মালদহ, মুর্শিদাবাদে কোনও বাস গেলে সেটিকে ফাঁকা ফিরতে হবে। তাই সাধারণ সময়ের তুলনায় ভাড়া বেশি হওয়ার কথা। তিনি বলেন, ‘‘কোনও শ্রমিককে জোর করে বাসে তোলা হচ্ছে না। অনেকে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ভাড়া করে বাস নিয়ে যাচ্ছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শ্রমিকদের সমস্যার কথা ভেবেই অনেক বাস যাচ্ছে। সে দিকটাও তো দেখতে হবে।’’
গত শুক্রবার সফিকুল ইসলাম ও তাঁর সঙ্গীরা বেসরকারি বাস ভাড়া করে মুর্শিদাবাদে গিয়েছেন। জনপ্রতি ৮০০ টাকা করে ভাড়া পড়েছিল বলে তিনি জানান। প্রত্যেক আসনে যাত্রী বসানো হয়েছিল। মনিপুর থেকে শিলিগুড়ি এসেছিলেন তাঁরা। দু’দিন তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসে থাকলেও ফেরানো হয়নি বলে অভিযোগ। সফিকুল বলেন, ‘‘বেশি ভাড়া দিয়েই ফিরতে হয়েছে।’’ শনিবার ২১ জন শ্রমিক শিলিগুড়ি থেকে দমদমে গিয়েছেন। তাঁদের বাস ভাড়া করতে ৪০ হাজার টাকারও বেশি লেগেছিল বলে দাবি।