North Bengal

রাতারাতি ভোলবদল ক্রয়কেন্দ্রের, তবে ভিড় খোলা বাজারে

অফিসঘর পেলেও, সরকারি কেন্দ্রে এ দিনও কোনও কৃষক ‘রেজিস্ট্রেশন’-এর জন্য আসেননি। অন্য দিকে, খোলা বাজারে এ দিনও ধান বিক্রি হয়েছে।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৫০
Share:

রাতারাতি প্রস্তুত ধান ক্রয়কেন্দ্রের অফিস। গৌরীহাটে।  ছবি: সন্দীপ পাল।

কাল ছিল খোলা জায়গায় দাঁড় করানো মোটরবাইকের আসনে ল্যাপটপ আর কাগজ রেখে ‘অফিস’। আজ হয়ে গেল পুরোদস্তুর সাইনবোর্ড টাঙানো পাকা বাড়িতে অফিস। জলপাইগুড়ির গৌরীহাটে সরকারি ধান ক্রয়কেন্দ্রের অফিসের ছবি বদলে গেল রাতারাতি। যদিও বদলাল না ধান কেনার ছবি। সরকারি আর খোলা বাজারে বিক্রির উল্টো ছবি দেখা গেল জলপাইগুড়িতে।

Advertisement

মোহিতনগরের গৌরীহাটের হাট কমিটির অফিসের পাশের ঘরে রাতারাতি তৈরি হয়েছে ধান ক্রয়কেন্দ্রের অফিস। গত সোমবার গৌরীহাটে গিয়ে দেখা গিয়েছিল, দু’জন সরকারি আধিকারিক দু’টি প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে রয়েছেন। তাঁদের সামনে আড়াআড়ি ভাবে দাঁড় করানো রয়েছে একটি মোটরবাইক। তার আসনের উপর ল্যাপটপ, কাগজ রেখে চলছে অফিসের কাজকর্ম। কারণ, টেবিল নেই। খোলা জায়গায় চেয়ার পেতে অফিস চালানোর এই খবর প্রকাশের পরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন এবং খাদ্য দফতর। রাতারাতি ঘর পেয়ে গিয়েছে গৌরীহাটের সরকারি ধান ক্রয়কেন্দ্র। হাট কমিটির পাশের ঘরে সাইনবোর্ড লাগিয়ে তৈরি হয়েছে অফিস। সরকারি ধান ক্রয়কেন্দ্রের আশ্রয়হীন অবস্থার খবর পেয়ে খোঁজ নিতে শুরু করেছিলেন জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শামা পারভিন। নির্দেশ যায় খাদ্য দফতরের শীর্ষ স্তরে। তার পরই এই ব্যবস্থা। প্রশ্ন উঠেছে, ঘরের ব্যবস্থা যখন করাই গেল, কেন আগে হল না? কাউকে সুবিধা দিতেই কি সরকারি কেন্দ্র ওই অবস্থায় রাখা ছিল?

খোলা বাজারে ধান বিক্রি চলছে। —নিজস্ব চিত্র।

অফিসঘর পেলেও, সরকারি কেন্দ্রে এ দিনও কোনও কৃষক ‘রেজিস্ট্রেশন’-এর জন্য আসেননি। অন্য দিকে, খোলা বাজারে এ দিনও ধান বিক্রি হয়েছে। এ দিন দু’হাজার টাকা কুইন্টাল দরে খোলা বাজারে ১৪ কুইন্টাল ধান কেনাবেচা হয়েছে। সরকারি কেন্দ্র যখন কৃষকের অপেক্ষায় বসে, আধিকারিকেরা যখন যুক্তি দিচ্ছেন ধান কাটা না হওয়ার, তখন সরকারি কেন্দ্রের পাশেই খোলাবাজারে ধান কেনাবেচা চলছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

গৌরীহাটের কৃষকেরা জানাচ্ছেন, ধান কেটে চটজলদি বিক্রি করা জরুরি আলু চাষের টাকা জোগাড় করার জন্য। খোলা বাজারে হাতে-হাতে টাকা মিলছে আর সরকারি কেন্দ্রে ধান কেনার পরিকাঠামোই নেই বলে কৃষকদের দাবি। এক কৃষক রমেন দাসের কথায়, ‘‘আজ ধান নিয়ে গেলে, আজই তো কিনবে না! আর হাতে এখন ধান রাখাও সম্ভব নয়।’’

জলপাইগুড়ির গোরীহাট কেন্দ্রের সঙ্গে এখনও চালকল জোড়া হয়নি। অর্থাৎ, কোন চালকল ধান কিনবে, তা নির্দিষ্ট করা হয়নি। কাজেই, ধান নিয়ে এলেও সরকারি ভাবে কেনা সম্ভব নয়। তাই কৃষকদের ভরসা খোলা বাজারই। খোলবাজারের ক্রেতা কানাই সরকার, সমীর রায়েদের বক্তব্য, সরকারি কেন্দ্র কুইন্টাল-পিছু কয়েক কেজি করে ধান দিলেও, তাঁরা পুরোটা কেনেন বলেই কৃষকেরা তাঁদের কাছেই আসছেন।

জলপাইগুড়ির খাদ্য নিয়ামক দাওয়া ওয়াঙ্গেল লামা বলেন, ‘‘দ্রুত সব ধান ক্রয়কেন্দ্রের সঙ্গে চালকল যুক্ত করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement