জলে ডুবে তাঁবু। ধূপগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র
একজন সুস্থ হয়ে কোভিড হাসপাতালে থেকে সরকারি অ্যাম্বুল্যান্সে মাঝরাতে বাড়ি ফিরছিলেন। আরেক জন কেরল থেকে ফিরে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে বাড়িতেই কোয়রান্টিন থাকার সরকারি নির্দেশ পেয়ে ঘরে আসছিলেন। দু’জনকেই আটকে দিল এলাকাবাসী। বাসিন্দাদের বিক্ষোভের জেরে মাঝরাতে সুস্থ রোগীকে নিয়ে ফের হাসপাতালে ফিরেছে অ্যাম্বুল্যান্স। বাড়িতে ঢুকতে না পেরে খোলা মাঠে প্লাস্টিক টাঙিয়ে রাতভর থাকতে হয়েছে কেরল ফেরত শ্রমিককে। এ দিন সকালে বাসিন্দারা দেখেছেন, চারদিকে বৃষ্টির জল থইথই। প্লাস্টিকের ঘেরাটোপের সামনে দিয়ে যাচ্ছে বিষধর সাপ, বিষাক্ত পোকা। সেই জলে পা ডুবিয়ে বসে রয়েছেন শ্রমিক। দু’টি ঘটনাকেই ‘অত্যন্ত অমানবিক’ বলে দাবি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এ নিয়ে এসপি-র সঙ্গে কথা বলেছেন বলে খবর। দুই ক্ষেত্রেই যাঁরা বাধা দিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
রবিবার দুপুরে প্রথম ঘটনাটি ঘটে ধূপগুড়িতে। পুরসভা ভবন এবং বিডিও অফিস লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা কেরল থেকে বাড়ি ফেরেন। নিয়মমতো স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে বাড়িতে কোয়রান্টিনে থাকার লিখিত নির্দেশ নিয়েই এসেছিলেন তিনি। অভিযোগ, তাঁকে দেখেই বাসিন্দাদের একাংশ চেঁচামেচি শুরু করেন। বাড়িতে তাঁর আলাদা থাকার মতো ঘরও নেই বলে পরিবার সূত্রে দাবি। ধূপগুড়ির ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরূপ দে-র সঙ্গে ওই যুবক যোগাযোগ করলে বাড়ির পাশেই একটি ফাঁকা মাঠে তাবু খাঁটিয়ে দেওয়া হয়। রাতভর তাঁবুর ভিতরে বসেও বৃষ্টিতে ভিজে যান তিনি। ওই শ্রমিক বলেন, “আমার জ্বর নেই, রোগও নেই। কিন্তু আমাকে একঘরে করে রাখা হয়েছে।” যুবকের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশকুমার সিংহ বলেন, “যুবককে অন্য কোথাও সরানো হবে।’’
সোমবার রাতে সুস্থ হওয়া রোগীকে বিক্ষোভের জেরে বেলাকোবা থেকে হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। সুস্থ হয়েও গোটা রাত তাঁকে হাসপাতালেই কাটাতে হয়েছে। এ দিন দুপুরে তাঁকে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গের ওএসডি সুশান্ত রায় বলেন, “অত্যন্ত অমানবিক ঘটনা। পুলিশের সঙ্গে কথা হয়েছে। এর পর যেখানে এমন কাণ্ড ঘটলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”