—ফাইল চিত্র।
আর কে যেতে পারেন দল ছেড়ে তারই খোঁজে বিধায়ক, নেতাদের বাড়ির উপরেও ‘নজর’ রেখেছেন ‘টিম পিকে’-র সদস্যরা। কেউ কেউ বারবার ফোন করে তাঁদের মন বোঝার চেষ্টা করছেন। তৃণমূলের অন্দরমহলেই এমন খবর ছড়িয়েছে।
কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামী তৃণমূল ছাড়ার পর আশঙ্কা ছড়িয়েছে শাসক-শিবিরে। বিজেপি নেতারাও দিল্লিতে বসে মাঝেমধ্যেই হাওয়া তুলছেন— রাজ্যের শাসকদলের আরও বিধায়ক, নেতা গেরুয়া শিবিরে যোগ দিতে চলেছেন।
তবে প্রকাশ্যে ওই দাবি মানতে নারাজ শাসকদলের কেউ। প্রদেশ তৃণমূল সহ-সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ জানিয়েছেন, তিনি বিষ পান করতেও রাজি, কিন্তু দলবদল করবেন না। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপির পক্ষে মানুষ নেই।’’ তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কো-অর্ডিনেটর তথা বিধায়ক অর্ঘ্য রায় প্রধান বলেন, ‘‘কেউই বিজেপিতে যাবেন না।’’
কোচবিহারে বিধানসভায় ৯টি আসনের মধ্যে ৮টি দখল করে তৃণমূল। তার মধ্যে মিহির বিজেপিতে য়োগ দিয়েছেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মিহির তৃণমূলের শুরুর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন। তিনি দলের ‘একনিষ্ঠ কর্মী’ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন৷ দলের অন্দরমহলের খবর, তাঁর দলত্যাগে চিন্তিত রাজ্য নেতারা। কোচবিহারে প্রায় ২২ বছর দলীয় সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ৷ বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, ফজল করিম মিয়া একই ভাবে দলের পুরনো নেতা হিসেবে পরিচিত। অর্ঘ্য রায় প্রধানও দীর্ঘ সময় ধরে দলের সঙ্গে রয়েছেন৷ বাকিদের মধ্যে জগদীশ বসুনিয়া, হিতেন বর্মণ, উদয়ন গুহ তৃণমূল রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় আসার আগে-পরে দলে য়োগ দিয়েছেন। উদয়ন গত বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলে য়োগ দেন। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় অবশ্য তরুণ নেতা হিসেবেই পরিচিত। ২০১৬ সালের লোকসভা নির্বাচনে সাংসদ হওয়ার পরে পার্থপ্রতিমের পরিচিতি বাড়ে। প্রত্যেকেই অবশ্য স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাঁরা কেউই দল ছেড়ে বিজেপিতে যাবেন না।
দলীয় সূত্রে খবর, মিহিরের দলত্যাগের পরে ‘টিম পিকে’ আর কারও উপরে সহজে ভরসা রাখতে পারছে না। তা-ই প্রতি দিন সকাল থেকেই ওই সংস্থার প্রতিনিধিরা তঋমমূল নেতাদের মন বুঝতে মাঠে নামছেন। তাঁরা নেতা, বিধায়কদের বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছেন। বাড়িতে কে আসছেন, কে বেরলেন সে দিকেও নজর রাখছেন। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিধায়ক বলেন, ‘‘টিম পিকের সদস্যরা আগের থেকে অনেক বেশি যোগায়োগ রাখছেন। আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন। আমি বলেছি অন্য দিকে দেখুন।" এম নেতার কথায়, "ঘরে শুধু নয়, বাড়ির বাইরেও বসে থাকছেন ওঁরা। মনে হয় উপর থেকে চাপ রয়েছে।"