Prashant Kishor

নেতাদের হাতে প্রশ্ন পিকে-র

তৃণমূল সূত্রে খবর, সে সব প্রশ্নের উত্তর দু’দিনের মধ্যে সরাসরি বা হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিতে বলা হচ্ছে কাউন্সিলরদের।

Advertisement

জয়ন্ত সেন

ইংরেজবাজার শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৫০
Share:

প্রশান্ত কিশোর। —ফাইল ছবি

ওয়ার্ডের প্রভাবশালী মানুষ, যে কোনও পদকজয়ী থেকে শ্রমজীবী, একান্নবর্তী পরিবারের কর্তা থেকে শুরু করে ক্লাবের কর্তা— ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিভিন্ন স্তর ও পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের খোঁজে পুরভোটের আগে প্রশ্নমালা নিয়ে ইংরেজবাজারের তৃণমূল কাউন্সিলরদের কাছে ঘুরছেন পিকে-র (ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর) দলের সদস্যেরা।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রে খবর, সে সব প্রশ্নের উত্তর দু’দিনের মধ্যে সরাসরি বা হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিতে বলা হচ্ছে কাউন্সিলরদের। উত্তর পেতেই ‘টিম পিকে’ সে সব মানুষের কাছে অভাব-অভিযোগ শুনতে শুরু করেছেন। কাউন্সিলরদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করে তাঁদেরও মতামত নেওয়া হচ্ছে।

নির্ঘণ্ট প্রকাশিত না হলেও কার্যত দোরগোড়ায় পুরভোট। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ২৯টি আসনের ইংরেজবাজারে গত পুরভোটে একক ভাবে ১৫টি আসন পেয়েছিল তৃণমূল। বাকিগুলি পায় বামফ্রন্ট, কংগ্রেস, নির্দল ও বিজেপি। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীকে পুরপ্রধান করে বোর্ড করে তৃণমূল।

Advertisement

রাজনৈতিক মহলের খবর, পরে বাম, কংগ্রেস ও নির্দল কাউন্সিলরদের অনেকে তৃণমূলে যোগ দেন। বিজেপিরও এক জন তৃণমূলে নাম লেখান। কিন্তু ২০১৬ সালের শেষ দিকে পুরপ্রধানের পদ থেকে কৃষ্ণেন্দুকে সরে যেতে বলা হয়। পুরপ্রধান হন নির্দল হিসেবে জিতে আসা নীহাররঞ্জন ঘোষ।

কিন্তু এই তিন বছরে পুরসভা পরিচালনা নিয়ে কৃষ্ণেন্দু-নীহার দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। কয়েক মাস আগে তৃণমূলেরই বেশির ভাগ কাউন্সিলর নীহারের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। শেষ পর্যন্ত রাজ্য নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ করে তা ধামাচাপা দেন।

গত লোকসভা নির্বাচনে ২৮টিতেই ‘লিড’ পায় বিজেপি। একটি ওয়ার্ডে কংগ্রেসের ‘লিড’ ছিল। তৃণমূল সূত্রে খবর, আসন্ন পুরভোটে দলের ফল যাতে ভাল হয় সে জন্য দলীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি ময়দানে নেমেছে পিকে-র সংস্থাও। তার সদস্যরা প্রশ্নমালা নিয়ে যাচ্ছে দলীয় কাউন্সিলরদের কাছে।

কী রয়েছে প্রশ্নমালায়?

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, কাউন্সিলরদের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের পাঁচ জন প্রভাবশালী বাসিন্দার নাম, মোবাইল নম্বর, কোন পেশার সঙ্গে তিনি যুক্ত, বাবা ও স্বামী বা স্ত্রীয়ের নাম-সহ নানা তথ্য নেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া চার থেকে পাঁচটি ক্লাবের নাম ও সেই ক্লাবের সম্পাদক এবং দু’জন করে সদস্যর নাম, এলাকার প্রয়োজনীয় পাঁচটি পরিষেবার কথা জানছে ‘টিম পিকে’। সঙ্গে নেওয়া হচ্ছে ওয়ার্ডের ‘হট-স্পট’ বা যেখানে রোজ প্রচুর মানুষের জমায়েত হয় এমন এলাকার ঠিকানা।

দলীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ব্যবসায়ী (পুরুষ ও মহিলা), ভাড়াবাড়ির মালিক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য, একান্নবর্তী পরিবার, সেনাকর্মী, যে কোনও স্তরে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব, ধর্মগুরু, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, ডাক্তার, জীবনবিমার এজেন্ট, আইনজীবী, নাপিত, ওষুধের দোকানি, এমনকী সুদের কারবারির নাম, ফোন নম্বরও নিচ্ছেন পিকে-র লোকেরা। তাঁরা সমাজসেবার পাশাপাশি আর কী কী কাজে যুক্ত— সেই তথ্যও নেওয়া হচ্ছে।

জানা গিয়েছে, প্রশ্নমালা হাতে পাওয়ার দু’দিনের মধ্যে তা পূরণ করে পাঠাতে হচ্ছে পিকে-র সংস্থার কাছে। তৃণমূলের এক কাউন্সিলর বলেন, ‘‘টিম পিকের পরিচয় দিয়ে ফোন করে দেখা করে প্রশ্নমালা দেওয়া হয়েছে। পূরণ করে জমাও দিয়েছি। ওই সব তথ্য নিয়ে তাঁরা কী করবেন জানি না।’’ আর এক কাউন্সিলার বলেন, ‘‘প্রশ্নমালা দেওয়ার পাশাপাশি একাধিক বিষয় নিয়ে জানতে চেয়েছেন পিকে-র লোকেরা।’’

জেলা তৃণমূল সভাপতি মৌসম নুর বলেন, ‘‘পিকে-র টিম শহরে ঘুরছে। কাউন্সিলর, মানুষের সঙ্গে তাঁরা কথা বলছেন। এর বেশি কিছু জানা নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement