আবার সঙ্কটে চা শিল্প। ফাইল চিত্র।
কোভিডের প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে উত্তরবঙ্গের চা শিল্প বেরিয়ে আসছে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। তবে নতুন করে সমস্যার আশঙ্কা তৈরি করেছে ইউক্রেনের যুদ্ধ। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে তার প্রভাব চা রফতানিতে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। রাশিয়ায় চা রফতানির ক্ষেত্রে পণ্যের দাম ফেরত পাওয়ার গ্যারান্টিও বন্ধ হয়ে পড়েছে। কেন না, ইউক্রেন রাশিয়ার সামরিক অভিযানের জেরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এক্সপোর্ট ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (ইসিজিসি) রাশিয়ায় রফতানি করা পণ্যের দাম ফেরত দেওয়ার গ্যারান্টি শুক্রবার থেকে বন্ধ করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ায় চা রফতানির ক্ষেত্রে উৎসাহ হারাবেন ব্যবসায়ীরা। রাশিয়া, ইউক্রেন, কাজাখস্থানে যে চা রফতানি হয় তার একটা অংশ উত্তরবঙ্গ থেকেও যায়। এখানকার বড় চা বাগান, বটলিফ কারখানার চা রফতানি হচ্ছে। দেশের মোট চা রফতানির ১৮ শতাংশ রাশিয়ায় যায়। ইউক্রেন, কাজাখস্থান মিলিয়ে সেটা ২২-২৪ শতাংশ। রফতানি চায়ের টাকা ফেরতের নিরাপত্তা না পেলে ব্যবসায়ীরাও চা পাঠাতে সাহস পাবেন না বলে দাবি।
শনিবার তরাই ব্রাঞ্চ ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন (টিবিআইটিএ)-এর বার্ষিক সাধারণ সভাতেও তা নিয়ে চা বাগানের মালিকেরা আলোচনা করেছে। তবে তাঁদের একাংশের দাবি, স্পষ্ট করে তাঁদের কাছে কোনও নির্দেশিকা এখনও আসেনি। তাই একটু অপেক্ষা করেই বিষয়টি দেখতে চান। ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন (আইটিএ)-এর চেয়ারপার্সন নয়নতারা পালচৌধুরী বলেন, ‘‘চা রফতানির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের অর্থ ফেরতের গ্যারান্টি বড় বিষয়। সেই নিরাপত্তা না-পেলে সমস্যা বাড়বে।’’
তবে শুধু রফতানির দিকে না-ঝুঁকে দেশের বাজারে চায়ের বিপণনে জোর দিতে চান তাঁরা। তরুণ এবং যুব সমাজকে চায়ের প্রতি আকৃষ্ট করতে তাঁরা উদ্যোগী বলে জানিয়েছেন। দেশে মাথাপিছু মাসে ৭৮৬ গ্রাম চায়ের চাহিদা বেড়ে এখন ৮০৫ গ্রাম হয়েছে। আইটিএ’র চেয়ারপার্সন জানান, রোড-শো, শপিং মলে, বিশ্ববিদ্যালয়ে চা নিয়ে প্রচার শুরু হয়েছে। স্কুল, কলেজেও তাঁরা বিষয়টিকে নিয়ে যেতে চান। সংস্থায় যুবদের নিয়ে একটি কমিটিও খোলা হয়েছে। সেই সঙ্গে ‘টি ট্যুরিজম’ও নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে বলে সংস্থার সেক্রেটারি জেনারেল অরিজিৎ রাহা, টিবিআইটিএ’র সম্পাদক রানা দে’দের দাবি।