—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দার্জিলিং পাহাড়ে শীতের কুয়াশার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নতুন করে চা বাগানের আশঙ্কার মেঘ বাড়ছে। এক দিকে বোনাসের শতাংশ বৃদ্ধির দাবি, আর একদিকে চা বাগানে জমির পাট্টার নথি, দুই মিলিয়ে নতুন বছরের শুরুটা পাহাড়ের চা বাগানকে কোন দিকে নিয়ে যাবে, তা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। শুক্রবার বামপন্থী চা শ্রমিক সংগঠনের নেতারা পাহাড়ের চা বাগান নিয়ে বৈঠকও করেছেন।
শ্রমিক সংগঠনগুলি বলছে, নভেম্বরের পরে বোনাস বৈঠক সরকার আর ডাকেনি। সেখানে সমান্তরাল ভাবে জমির পাট্টা দেওয়া এবং সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে। যা নিয়ে নানা মতামত, দাবি রয়েছে। পরিস্থিতি যা, তাতে পাহাড়ের চা বাগানের জন্য সরকারি সদর্থক ভূমিকা দ্রুত প্রয়োজন। না হলে, আগামীতে পাহাড়ে নতুন করে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
প্রাক্তন সাংসদ তথা চা শ্রমিকদের পাহাড়ের যৌথ মঞ্চের নেতা সমন পাঠক উদ্বেগের কথা গোপন করেননি। তিনি বলেন, ‘‘পুজোর পরে তিনমাস হয়ে গেল। বোনাস নিস্পত্তি করা হয়নি। বৈঠক ডাকা হবে করে-করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আবার জমির পাট্টা নিয়ে সমীক্ষাও হচ্ছে, পাট্টা দেওয়াও চলবে বলা হচ্ছে। শ্রমিক অসন্তোষ ছড়াচ্ছে।’’
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত তিনদিন ধরে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক দার্জিলিং পাহাড়েই ছিলেন। শুক্রবার সকালে মন্ত্রী কলকাতা ফিরে গিয়েছেন। দার্জিলিং ‘মেলো ফেস্টিবলে’ তিনি যোগও দেন। সেখানে পাহাড়ের চা শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথাও বলেছেন। শাসক প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার শ্রমিক সংগঠনের নেতারা শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে পাহাড়ের পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন। বোনাস বৃদ্ধির দাবি থেকেও ধীরে ধীরে জমির পাট্টার বিষয়টি সামনে এনে বিরোধীরা রাজনৈতিক ভাবে পরিস্থিতি গরম করতে চাইছেন তাও জানানো হয়েছে।
প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার চা শ্রমিক সংগঠন হিল তরাই ডুয়ার্স প্ল্যান্টেশন ইউনিয়নের সভাপতি জেবি তামাং বলেন, ‘‘শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়েছে। সমস্ত পরিস্থিতির কথা বলেছি।’’ তিনি জানান, পাহাড়ে বড়দিনকে ঘিরে শীতে নানা উৎসব হয়। একে মাথায় রেখে বোনাস বৈঠক ডাকা হবে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন। আর পাট্টা শ্রমিকেরা পাবেন, এ নিয়ে বিরোধীরা কেউ-কেউ অপপ্রচার করছেন। সম্প্রতি ৫ ডেসিমেল জমির পাট্টা নিয়ে পাহাড়ে চা বাগিচা এলাকায় আলোচনা বেড়েছে। শ্রমিকেরা যে যেখানে বসে আছেন, সেই শ্রমিক জমির পাট্টার দাবি তোলা হয়েছে। বাগানের অন্য জমিতে ৫ ডেসিমেল জমি দেওয়া হলে তা নেওয়া হবে বলে শ্রমিক নেতারা জানান। সরব হয়েছেন হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড।
প্রায় সাত বছর পরে বোনাস নিয়ে অসন্তোষের জেরে বন্ধ দেখছে দার্জিলিং পাহাড়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দার্জিলিং জেলাতেই থাকার সময় বন্ধ হয়। এ বার বোনাসের পাশে এসে পাট্টার প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ। শ্রমিক নেতারা চাইছেন, দ্রুত বৈঠক ডেকে সুষ্ঠু মীমাংসার পথে হাঁটুক সরকার।