বাংলাদেশে ইসকনে ভাঙচুর এবং সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের প্রতিবাদে গান বেঁধেছেন উত্তরবঙ্গের পরিচিত লোকশিল্পী সৈয়দ নজরুল হক। শোনাবেন বইমেলা সহ অন্যান্য অনুষ্ঠানে। নিজস্ব চিত্র
বইমেলায় ‘হরিনাম’ শোনাবেন সৈয়দ নজরুল হক। নিজেই গান বেঁধেছেন নজরুল। তাতে হরিনাম যেমন রয়েছে, তেমনই রামের নামেও জয়ধ্বণি রয়েছে। রয়েছে কৃষ্ণ প্রেমের বর্ণনা। জলপাইগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গের লোকশিল্পীদের মধ্যে অন্যতম পরিচিত সৈয়দ মজরুল হরি নামের গান বেঁধেছেন প্রতিবাদে। বাংলাদেশে ইসকনের সন্ন্যাসীদের উপর আক্রমণ এবং সংখ্যালঘুদের উপরের অত্যাচারের প্রতিবাদ নজরুল জানাবেন গানের মধ্যে দিয়ে। সোমবার থেকে জলপাইগুড়ি জেলা বইমেলা শুরু হয়েছে ময়নাগুড়িতে। সেই মেলায় আজ, মঙ্গলবার গান শোনানোর ডাক পেয়েছেন নজরুল হক। শিল্পী ঘোষণা করেছেন, প্রথম গানটি হবে প্রতিবাদের।
প্রতিবাদের নাম হরি নামে কেন, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নজরুল বলেন, “শুনেছি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ধর্মাচরণে বাধা দেওয়া হচ্ছে, সে কারণেই ইসকনের সন্ন্যাসীদের উপর আক্রমণ করা হচ্ছে। যে নাম উচ্চারণে বাধা দেওয়া হচ্ছে, সেই নামেই গান বেধেছি। আমি একজন মুসলিম, কিন্তু আমার প্রতিবাদ জানাব হরি নাম, রাম নাম, কৃষ্ণ নাম গেয়ে।” ইসকন কৃষ্ণ নামের প্রচারক বলেই জলপাইগুড়ির মুসলিম লোকশিল্পী প্রতিবাদে বেছে নিয়েছেন হরি নাম। তিনি নিজে মুসলিম হয়ে কৃষ্ণ নামে গান লিখলে তাঁকেও আক্রমণের মুখে পড়তে হতে পারে?
নজরুল বললেন, “শ্রী কৃষ্ণ প্রেমের কথা বলেছিলেন, আমাদের ধর্মও প্রেম ভালবাসা ভক্তির কথা বলে। কোনও বিরোধ নেই। বিরোধ তো কিছু মানুষ তৈরি করতে চায়। এর আগেও কতবার আমাকে হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে, আমি ওসের পরোয়া করি না। আমরা তো শিল্পী, শিল্পীর কোনও জাত নেই। গান গাই, গান ছাড়া প্রতিবাদ জানানোর ভাষা নেই।”
এক সময়ে বামপন্থী নজরুল হক অধুনা তৃণমূল শিবিরের কাছের লোক বলে পরিচিত। যদিও নানা প্রতিবাদে মুখর হতে দেখা যায় নজরুল হককে। আরজি কর কাণ্ড নিয়ে তিলোত্তমা নামে গান লিখেছিলেন তিনি। নজরুলের স্ত্রী নূরজাহান বেগম জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষা এবং মহিলা তৃণমূলের জেলা সভাপতি। স্বামীর প্রতিবাদের কথা জানেন তিনিও। তবে তা নিয়ে কোনও মতামত দেন না। নজরুল বলেন, “আমার গান কবিতা নিয়ে নূরজাহান কোনও হস্তক্ষেপ করে না, আমিও প্রশাসনিক বিষয়ে নূরজাহানকে কিছু বলি না।” নজরুলের বাড়িতেই সদ্য বাঁধা প্রতিবাদের গানের মহড়া চলছে।