দেখা: জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক করে বেরোচ্ছেন কৃষ্ণ কল্যাণী। রায়গঞ্জের কর্ণজোড়াতে। ছবি: চিরঞ্জীব দাস
রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী কী তৃণমূলে ফিরবেন? এই প্রশ্নে উদ্বিগ্ন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। বিজেপি সূত্রের খবর, কৃষ্ণ ‘বেসুরো’ হওয়ার পর রবিবার ও সোমবার বিজেপির একাধিক রাজ্য নেতৃত্ব তাঁকে ফোন করে তাঁর অবস্থান জানার চেষ্টা করেছেন। তাঁদের মধ্যে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী কৃষ্ণকে ফোন করে তাঁর উপর আস্থা রাখার অনুরোধ করে কৃষ্ণর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন।
বিধায়কদের তৃণমূলে ফেরা প্রসঙ্গে এ দিন কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, "পুরনো কর্মীদের টিকিট দেওয়া হলে দলে এমন পরিস্থিতি হত না। এমন অনেককে টিকিট দেওয়া হয়েছে যারা আসলে বিজেপি করতেন না। তার ফল ভোগ করতে হচ্ছে এখন। আগামীতে এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে সচেতন থাকতে হবে।"
এদিকে, কৃষ্ণর সঙ্গে বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার ও রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর বিরোধ এখনও কাটেনি বলে অভিযোগ। বিজেপির অন্দরের খবর, তিনি ‘বেসুরো’ হওয়ার পর এখনও পর্যন্ত বাসুদেব-সহ দলের জেলা নেতৃত্ব কিংবা দেবশ্রী কৃষ্ণর সঙ্গে কথা বলেননি। এই পরিস্থিতিতে সোমবার দুপুরে রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় গিয়ে উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক অরবিন্দকমার মিনার সঙ্গে মিনিট কুড়ি বৈঠক করেন কৃষ্ণ। ‘বেসুরো’ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্য সরকার নিযুক্ত জেলার সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কর্তার সঙ্গে কৃষ্ণর ওই বৈঠকের ‘কারণ’ ঘিরে জেলায় বিজেপির অন্দরে নানা প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, কিছুদিন আগে জেলার বিজেপি বিধায়কদের সরকারি বৈঠকে ডাকা হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলে এই জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছিলেন কৃষ্ণ।
জেলাশাসকের অবশ্য বক্তব্য, “বিধায়ক তহবিলের টাকায় উন্নয়নের ব্যাপারে কৃষ্ণবাবু আমার সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছিলেন।” কৃষ্ণেরও দাবি, বিধায়ক তহবিলে উন্নয়নের প্রস্তাব দেওয়ার জন্যই জেলাশাসকের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন।
উল্লেখ্য, তিনি দলে সম্মান পাচ্ছেন না। তাঁর বিরুদ্ধে দলে ষড়যন্ত্র চলছে। একথা দাবি করে রবিবার বাসুদেব ও দেবশ্রীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে জেলায় দলের সবরকম কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান কৃষ্ণ। বিজেপি সূত্রে খবর, তিনি বেসুরো হতেই রবি ও সোমবার তাঁকে শুভেন্দু ছাড়াও লকেট চট্টোপাধ্যায়, নিশীথ প্রামাণিক, অমিতাভ চক্রবর্তীর মতো দলের রাজ্য নেতানেত্রীদের অনেকেই তাঁকে ফোন করে তাঁর অবস্থান জানতে চান। কৃষ্ণ বলেন, “প্রত্যেকেই আমাকে বিজেপিতে থাকার অনুরোধ করেছেন। আমি তৃণমূলে যোগ দিলে সবাইকে জানিয়েই যোগ দেব বলে তাঁদের জানিয়ে দিয়েছি।” বাসুদেব বলেন, “বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্ব দেখছেন।”
তথ্য সহায়তা: নমিতেশ ঘোষ