উত্তরাখণ্ডে বেড়াতে গিয়ে এক জাতীয় উদ্যানে বছর দুয়েক আগে বন্ধুত্ব হয়েছিল দুই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর। কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা সুমিতা দত্ত এবং উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা প্রতিমা দে দু’জনেই এক সঙ্গে মাঝেমধ্যে ভ্রমণে বের হতেন। রবিবার সকালে একটি বেসরকারি পর্যটন সংস্থার সঙ্গে আরও কয়েকজন সমবয়সীকে দলে নিয়ে গরুমারা জাতীয় উদ্যানে বেড়াতে এসেছিলেন। এক জাতীয় উদ্যানে পরিচয় হওয়া বন্ধুর সঙ্গে আর এক জাতীয় উদ্যানে বেড়াতে এসে চিরদিনের মতো বিচ্ছেদ হবে, তা রবিবার গভীর রাত পর্যন্ত জানেন না সুমিতা। তাঁর শরীরের কথা ভেবে বান্ধবীর মৃত্যুর কথা জানানো হয়নি বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।
এ দিন দুপুরের খাওয়া সেরে বান্ধবীকে নিয়েই অন্যদের সঙ্গে গরুমারা জাতীয় উদ্যানে জঙ্গল সাফারি করতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথেই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান প্রতিমা। গুরুতর জখম অবস্থায় জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে শুয়ে বার বার বান্ধবী প্রতিমার খোঁজ করছিলেন সুমিতা।
সুমিতা বলেন, ‘‘প্রতিমা দে কোথায় আছেন বলতে পারেন? জ্ঞান ফিরে আসার পর থেকে খুঁজে পাচ্ছি না। আমার তো পরিবারে কেউ নেই। তাই আমার বাড়িতে খবর দেওয়ার কোনও দরকার নেই। শুধু প্রতিমার খোঁজটা
দিন না প্লিজ়!’’
তিনি জানান, গরুমারা জাতীয় উদ্যানের গভীর জঙ্গল থেকে বের হওয়ার আগেই বৃষ্টি শুরু হয়। গাইড ও গাড়ির চালক আদিবাসী নাচের অনুষ্ঠান দেখে যাওয়ার কথা বললেও তাঁরা অপেক্ষা করতে চাননি। পর্যটক আবাসে ফেরার পথেই দুর্ঘটনার পর আর কিছু মনে নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। জ্ঞান ফেরার পর থেকেই বার বার বান্ধবী প্রতিমার খোঁজ করছিলেন বলে জানালেন হাসপাতালের কর্মীরা।
দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামের কৃষ্ণপল্লির বাসিন্দা প্রজেশ মল্লিক, তাঁর স্ত্রী মাধুরী ও বোন মীরা মল্লিক। দাদা ও বৌদিকে সঙ্গে নিয়েই বোন মীরা মাঝেমধ্যেই বেড়াতে যান। মাধুরী বলেন, ‘‘আমার এ বার আসার তেমন ইচ্ছে ছিল না। ননদের অনুরোধে বাধ্য হয়েই এসেছি। কিন্তু এমন দুর্ঘটনার শিকার হতে হবে তা ভাবতেই পারছি না।’’