Coronavirus

করোনা-বেডে সঙ্গী পড়াশোনা

কোভিড হাসপাতাল সূত্রের খবর, চিকিৎসাকর্মীদের ছাত্রী জানিয়েছে, লকডাউন উঠলে সেপ্টেম্বরেই তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা হবে।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২০ ০৪:১৮
Share:

প্রতীকী ছবি

তিনি করোনায় আক্রান্ত। বিছানার একপাশে ভেন্টিলেটার। স্যালাইন, অক্সিজেন সবই মজুত। গত কয়েকদিন আশেপাশে যাঁকেই দেখেছেন সকলের সুরক্ষাবর্মে ঢাকা। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যেয় তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষা করে রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসার পরে সামনাসামনি এসে তাঁর সঙ্গে কথা বলার লোকের সংখ্যাও কমে গিয়েছে। তাতেও মুষড়ে পড়েননি করোনা আক্রান্ত ছাত্রী। নিজের সর্বক্ষণের সঙ্গী করেছেন পড়াশোনাকে। কলকাতায় তাঁর কলেজের শিক্ষিকাদের অনলাইন ক্লাস করছেন কোভিড হাসপাতালের বিছানাতে শুয়েই। খাতায় কলমে নোট নিচ্ছেন। বইখাতা-র প্রয়োজন হতে পারে বলে বাড়িতেও খবর পাঠিয়েছেন।

Advertisement

কোভিড হাসপাতাল সূত্রের খবর, চিকিৎসাকর্মীদের ছাত্রী জানিয়েছে, লকডাউন উঠলে সেপ্টেম্বরেই তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা হবে। এই পরীক্ষাই চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা। হাসপাতালের এক কর্মীর কথায়, “মেয়েটির জেদ আছে। যে রোগীর লালারসের নমুনায় সংক্রমণ ধরা পড়েনি সে-ও কোভিড হাসপাতালে ভর্তি হয়ে আতঙ্কে আধমরা হয়ে যায়। আর করোনা আক্রান্ত মেয়েটি দিব্যি হাসপাতালে শুয়ে অনলাইনে পড়াশোনা করছে। একেই বলে প্রাণশক্তি।”

জলপাইগুড়ির গড়ালবাড়ির বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত যুবতী কলকাতার চিত্তরঞ্জন নার্সিং কলেজের ছাত্রী। ৮ মে সহপাঠীদের সঙ্গে তিনিও কলকাতা থেকে জলপাইগুড়িতে ফেরেন। কয়েকদিন পরে জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা প্রথমে সাধারণ হাসপাতালে ভর্তি করান, সেখান থেকে পাঠানো হয় সারিতে। ছাত্রীটি বরাবরই পড়াশোনায় ভাল বলে পরিবারের দাবি। জলপাইগুড়ির প্রসন্নদেব কলেজে ভূগোলে স্নাতক নিয়ে পাশ করেন। ভূগোল নিয়ে মাস্টার ডিগ্রি করার জন্য স্নাতকোত্তর পাঠক্রমেও ভর্তি হন। এক বছর পড়ার পরেই নার্সিং প্রবেশিকা পরীক্ষায় ভাল ফল করেন। ছাত্রীর দাদা এ দিন ফোনে বলেন, “আমার বোনকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব চলছে। আমাদের ফোন করে অনেকে জানতে চাইছে, বোন বেঁচে আছে কিনা। অথচ ও হাসপাতালে শুয়ে দিব্যি পড়াশোনা করছে।” হাসপাতাল কর্মীদের একাংশের দাবি, ওই ছাত্রী জানিয়েছেন, বাড়ির আর্থিক অবস্থা বিশেষ ভাল নয়, পরিবারের জন্যই পড়াশোনা শেষ করে ভাল চাকরি তাঁকে পেতেই হবে। তাই বিছানার পাশে ভেন্টিলেটার এলেও, হাত বই থাকছেই।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement