প্রতীকী ছবি।
প্রকাশিত হয়েছে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফল। শীর্ষস্থানে উত্তরবঙ্গের কৃতী পড়ুয়া। জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ বার কাউন্সেলিংয়ের পাশাপাশি রিপোর্টিংও হবে অনলাইন পদ্ধতিতে। করোনা-পরিস্থিতির কারণেই এই সিদ্ধান্ত। কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে অনলাইন এই প্রক্রিয়া ছাড়া এখন বিকল্প পথও নেই। কিন্তু গোটা বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত উত্তরের প্রান্তিক পড়ুয়ারা।
করোনাকালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা মাঝপথে স্থগিত হয়ে যাওয়ার বেশ কিছুদিন পর অনলাইন পদ্ধতিতে এবং পরে টেলিভিশনের মাধ্যমে বিকল্প পঠনপাঠনের ব্যবস্থা চালু করেছিল রাজ্য সরকার। সে উদ্যোগ ইতিবাচক হলেও সব পড়ুয়ার কাছে যে এই বিকল্প ব্যবস্থা পৌঁছেছিল, এমন নয়। স্মার্টফোন না থাকায় , অনলাইন পাঠের সুযোগ নিতে পারেনি প্রান্তিক পড়ুয়ারা। সমস্যা হয়েছিল অনলাইন মাধ্যমটি সম্পর্কে পড়ুয়াদের অনেকে ওয়াকিবহাল না হওয়ার কারণেও। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রেও সেই সমস্যা থাকবে বলে মনে করছেন শিক্ষাজগতের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন।
অনলাইন ভর্তির প্রথম ধাপ কলেজের ওয়েবসাইট দেখা। কিন্তু প্রান্তিক বহু পড়ুয়ারই কম্পিউটার তো দূরের কথা, স্মার্টফোনও নেই। বাড়ির কাছাকাছি সাইবার কাফে থাকলে তার সাহায্য নেওয়া ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই তাঁদের। ঘটনা হল, উত্তরবঙ্গের সব গ্রামীণ অঞ্চলে সাইবার কাফেও নেই। যেখানে যেখানে আছে, তার চেহারাও শহরের তুলনায় অনেকটাই আলাদা। গ্রামাঞ্চলে কাফে মানে ছোট্ট দোকানে টেবিলের উপর রাখা একটি বা দু’টি ডেস্কটপ। বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট পরিষেবা সচল থাকলে তাতে কোনওমতে কাজ হয়।
সমস্যা আরও আছে। যে সব পড়ুয়া স্মার্টফোনের সঙ্গেই সে ভাবে পরিচিত নন, তাঁদের পক্ষে ওয়েবসাইট দেখা বা অনলাইন ফর্ম ভরা সহজ নয়। এঁদের অভিভাবকদের অনেকেই গোটা বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত নন। সে ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সাহায্য পাওয়া কঠিন। এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়বেন প্রান্তিক এবং প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়ারা। ধূপগুড়ি সুকান্ত মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ নীলাংশুশেখর দাসের বক্তব্য, ‘‘কলেজের ওয়েবসাইটে প্রয়োজনীয় সব তথ্য দেওয়া থাকলেও অভ্যস্ত না হওয়ার কারণে অনেক পড়ুয়ারাই সেগুলি মন দিয়ে দেখেন না। পাস বা অনার্সের বিষয়গুলিতে প্রান্তিক পড়ুয়ারা অভিভাবকের কোনও সাহায্য পান না। তাই এই সব বিষয়ে পড়ুয়াদের শিক্ষকদের সাহায্যই নিতে পবে।’’ তবে, সমস্যা থাকলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যে অনলাইন প্রক্রিয়া ছাড়া গতি নেই, সে বিষয়ে একমত সংশ্লিষ্ট সব পক্ষই।