Coronavirus

এ বার জামাই পাবে ষষ্ঠীর কৌটো

জামাইরাও না পারছেন জেলায় আসতে, না পারছেন জেলা থেকে অন্যত্র যেতে।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২০ ০৬:০১
Share:

ভিড় নেই: সামনেই জামাইষষ্ঠী। এখনও ফাঁকা বাজার। ক্রেতার আশায় এক ব্যবসায়ী। জলপাইগুড়ি শহরে। ছবি: সন্দীপ পাল

মাছ বাজারে ইলিশ, চিতল, পাবদা আছে। ফলের দোকানে ঝুড়ি ভর্তি হিমসাগর, কোহিতুর, রানিপসন্দও। ময়রা এখনও গেল শীতের কিছু খেজুর গুড় বাঁচিয়ে রেখেছেন জামাইষষ্ঠীর দিন রসগোল্লায় দেবে বলে। লকডাউন খানিকটা শিথিল হতে তালপাতার পাখাও বাজারে মিলছে। সবই আছে, কিন্তু জৈষ্ঠ্যের এই ষষ্ঠীতেই জামাইবাবাজিই ‘বাড়ন্ত’। করোনা সংক্রমণের জেরে এক জেলার সঙ্গে আর এক জেলার যাতায়াতের দরজা প্রায় বন্ধ। পাশাপাশি দুই শহরেও যেন আড়ি হয়েছে। যদি বা কেউ চলে আসেন, টের পেয়ে আশপাশের লোকেরা জড়ো হয়ে তাঁকে কোয়রান্টিনে পাঠানোর দাবি তুলছেন। এই পরিস্থিতিতে ভিন্ জেলা-শহরের বাসিন্দা জামাইরা কি শ্বশুরবাড়ি আসার ঝুঁকি নেবেন? কোন বরাভয়ে শাশুড়িই বা ভিন্ শহরবাসী জামাইকে ডাক পাঠাবেন? জামাইরাও না পারছেন জেলায় আসতে, না পারছেন জেলা থেকে অন্যত্র যেতে।

Advertisement

যেমন ধরা যাক, প্রীতম পালের কথা। মাস কয়েক আগেই বিয়ে হয়েছে তাঁর। প্রথমবারের জামাইষষ্ঠীতেই লকডাউন! শ্বশুরবাড়ি মেঘালয়ে। প্রীতমের কথায়, “বাস-ট্রেন চলছে না। নিজে গাড়ি ভাড়া করে যেতে পারি। তা হলে তো ওখানে গিয়ে ১৪ দিনের কোয়রান্টাইন, আবার ফিরে এসে ১৪ দিনের কোয়রান্টিন। বড্ড হ্যাপা হয়ে যাবে।”

এই অবস্থায় মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি শহরের বেশ কিছু বাজারে ঢুঁ মেরে দেখা গেল, মাছ-মাংসের দাম বেশ চড়া। বিক্রিও হচ্ছে। স্টেশন বাজারের মাছ বিক্রেতা রাকেশ শাহ বললেন, “জামাইষষ্ঠীর বাজার আগের মতো না হলেও, বিক্রিবাটা হচ্ছে। জামাইয়ের পছন্দের মাছ কিনছেন অনেকে।” আসলে যাঁরা এই শহরেই আছেন, সে তিনি জামাই হোন বা শ্বশুর, কেউই উপলক্ষটা বাদ দিতে চাইছেন না। কিন্তু কী ভাবে? সামাজিক দূরত্বের বিধি কি তবে জলাঞ্জলি দেওয়া হবে?

Advertisement

প্রাক্তন ব্যাঙ্ককর্মী আদিত্য বসুর কথায়, “জামাইয়ের পছন্দের চিতল কিনেছি, অল্প করে গলদাও নিয়েছি। এ বার তো বসিয়ে খাওয়ানোর সুযোগ নেই। রান্না করে টিফিন কৌটো জামাইয়ের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসব।” কেউ কেউ আবার শ্বশুরবাড়িতে ভোজের আমন্ত্রণ লকডাউনেও উপেক্ষা করতে পারছেন না। শহরেরই এক স্কুল শিক্ষক জামাইয়ের কথায়, “জামাইষষ্ঠীর দিনে খাতিরটাই আলাদা হয়। ভাগিস্য একই শহরে শ্বশুরবাড়ি। স্নান করে পকেটে স্যানিটাইজ়ার নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যাব। মুখে থাকবে মাস্ক।” তবে বেশিরভাগেরই পরিকল্পনা, ভালমন্দ রেঁধে জামাইয়ের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া।

কোনও কোনও যৌথ পরিবার আবার জামাইষষ্ঠীর খরচ বাঁচিয়ে তা দিয়ে ত্রাণ বিলির পরিকল্পনাও করেছে। জামাইষষ্ঠীর দিন কেটারারের খরচের সঙ্গে আর কিছু যোগ করে চাল-আলু-তেল বিলির কথা ভেবেছেন অনেকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement