মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে পর্যাপ্ত হুইল চেয়ার রয়েছে কীনা, তা পরিদর্শন করছেন সুপার। মঙ্গলবার। ছবি: গৌর আচার্য।
রায়গঞ্জ মেডিক্যালে স্যালাইনের অভাব ও চিকিৎসা-গাফিলতির অভিযোগে রোগীমৃত্যুর ঘটনার রিপোর্ট তলব করল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সোমবার রাতেই স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে মঙ্গলবার মেডিক্যালের তরফে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।
যদিও ওই রিপোর্টে স্যালাইনের অভাব ও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ মানা হয়নি। ওই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে এ দিনই মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ সাত সদস্যের কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুরে সামাজিক মাধ্যমে এক পুরুষ রোগীকে পিঠে করে মেডিক্যালের দোতলায় বহির্বিভাগে নিয়ে যাওয়ার ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) ‘ভাইরাল’ হয়। তাতে রোগী বহনকারী মহিলা মেডিক্যালে হুইল চেয়ার ও ট্রলি না পাওয়ার অভিযোগ তোলেন। ভিডিয়ো ‘ভাইরাল’ হতেই মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে পর্যাপ্ত হুইল চেয়ার ও ট্রলির ব্যবস্থা করতে আসরে নামেন কর্তৃপক্ষ। সোমবার মেডিক্যালে স্যালাইনের অভাব ও চিকিৎসায় গাফিলতির জেরে কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা হিরন্ময় মোহান্ত নামে এক ব্যক্তি মারা যান বলে অভিযোগ। একই দিনে, জরুরি বিভাগে হুইল চেয়ার না পেয়ে রায়গঞ্জের রায়পুরের বাসিন্দা সলিতা বর্মণ তাঁর স্বামী পরিতোষ বর্মণকে পিঠে তুলে দোতলার বহির্বিভাগে নিয়ে যেতে বাধ্য হন বলে দাবি করেন।
মেডিক্যালের সুপার প্রিয়ঙ্কর রায় মঙ্গলবার বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে হিরন্ময়বাবু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তরল ওষুধ দেওয়ার জন্য তাঁকে যতটুকু প্রয়োজন স্যালাইন দেওয়া হয়।” তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তলব করা রিপোর্টে প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসা ওই তথ্যই পাঠানো হয়েছে। তাও ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তে মেডিক্যালের বিভিন্ন বিভাগের সাত চিকিৎসককে নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ‘ভাইরাল’ ভিডিয়ো ছড়ানোর পরেই বৈঠকে বসেন মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ। মেডিক্যালের সুপার প্রিয়ঙ্করের নেতৃত্বে আধিকারিকেরা জরুরি বিভাগ-সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে হুইল চেয়ার ও ট্রলি ঠিক মতো মজুত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখেন। সব ওয়ার্ডে সর্বক্ষণ অন্ততপক্ষে দু’টি করে হুইল চেয়ার ও ট্রলি রাখার নির্দেশ দেন প্রিয়ঙ্কর। তিনি বলেন, “সর্বত্র হুইল চেয়ার ও ট্রলি মজুত। ‘ভাইরাল’ ভিডিয়ো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”