—প্রতীকী চিত্র।
এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের নির্দেশের পরেই জলপাইগুড়ির শতাধিক শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কার সঙ্গে শুরু হয়েছে আরও এক চর্চা, কাদের সুপারিশে বা মাধ্যমে নিয়োগ ‘নিয়মবহির্ভূত’ হল? এই চর্চায় উঠে এসেছে একাধিক রাজনৈতিক নেতা, বর্তমান এবং অবসরপ্রাপ্ত কিছু শিক্ষক এবং সর্বশিক্ষা মিশনের অবসরপ্রাপ্ত জনাকয়েক কর্মীর নামও।
একটি সূত্রের দাবি, হাই কোর্টের নির্দেশে এই সব নামও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আতসকাচের নীচে আসবে। সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যেই তদন্তকারী সংস্থার কাছে নামের তালিকা গিয়েছে এবং তা নিয়ে চর্চা চলছে। চর্চায় এ-ও শোনা যাচ্ছে, তদন্তকারী সংস্থার কাছ থেকে এঁদের ডাক পড়তে পারে। নিয়োগ-দুর্নীতি কাণ্ডে জলপাইগুড়ির বেশ কয়েকজন শিক্ষাকর্মীকে এবং শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কোনও ভাবে যুক্ত রয়েছেন, এমন কর্মীদের জেরা করেছে সিবিআই। সে জেরা থেকেই উঠে এসেছে বেশ কিছু নাম, কিছু নাম মিলেছে ধৃত ব্যক্তিদের থেকেও। নিয়মবহির্ভূত ভাবে নিয়োগের সুপারিশ করেছেন, এমন এক নেতা সম্প্রতি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বলেও চর্চা চলছে। তা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূলই। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “বিজেপি তো নিজেদের ওয়াশিং মেশিন ভেবে থাকে। ওদের দলে না গেলে সবাই চোর, গেলে কেউ কিছু নয়।” বিজেপি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “বহু তৃণমূল নেতা সরকারি চাকরি বিক্রিতে জড়িত। তদন্তে সবই উঠে আসবে। একে একে ডাক পাবেন। কেউ দুর্নীতি করে থাকলে বিজেপিতে এসে বা অন্য কোথাও গিয়েও পার পাবেন না, এটাই দলের নীতি।”
জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায় বলেন, “যা বলার আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিয়েছেন।” জেলা তৃণমূলের আর এক নেতার দাবি, “জলপাইগুড়িতে কোনও নেতার আত্মীয় বা পরিবারের কারও নাম বাতিল হওয়া প্যানেলে নেই। তৃণমূলের কারও এর সঙ্গে সম্পর্কও নেই।”তৃণমূল সূত্রের দাবি, নেতাদের অনেক অনুগামীরই পরিবারের সদস্যদের নামের তালিকা বাতিল হওয়া প্যানেলে রয়েছে। নেতাদের সুপারিশে চাকরি হয়েছে, এমন অনেক জল্পনাও চলছে। প্রাক্তন জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি তথা জলপাইগুড়ির উপপুরপ্রধান সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের আশা, “হাই কোর্টের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হয়ে যাবে।” আপাতত সূত্রের খবর, বাতিল হওয়া শিক্ষক এবং কর্মীদের মধ্যে জলপাইগুড়ির অন্তত ২০টি স্কুল রয়েছে। জেলা শিক্ষা বিভাগদের এক কর্তার দাবি, নিয়োগের যে ‘প্যানেল’ বাতিল হয়েছে, তাতে জলপাইগুড়ির স্কুলের সংখ্যা ছিল তুলনামূলক কম। যদিও দুই শিক্ষক নেতা এবং প্রাক্তন শিক্ষাকর্মীর নাম চর্চায় রয়েছে বলে দাবি।