ফাইল চিত্র।
অনেক দিন চুপ থাকার পরে, ফের সক্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছেন কেএলও প্রধান জীবন সিংহ। অন্তত পক্ষে সমাজমাধ্যমে পর পর জীবনের ভিডিয়ো বার্তা সে ইঙ্গিতই দিয়েছে। আচমকা এমন ভাবে উত্তরবঙ্গে অস্থির পরিবেশ তৈরির চেষ্টার পিছনে দায়ভার কার? তা নিয়েই রাজ্যের শাসক ও বিরোধী দলের মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
তৃণমূলের দাবি, এ বারের বিধানসভার ফল প্রকাশের পরে রাজ্যের ক্ষমতায় আসতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়ে বিজেপি। উত্তরবঙ্গের তিনটি জেলায় বিজেপির ফল একটু ভাল হয়েছে। সেই জায়গাগুলি নিয়ে তাঁদের সাংসদ-বিধায়কেরা আলাদা রাজ্যের দাবি তুলতে শুরু করেন। আর তাতেই উৎসাহিত হয়ে পড়েন কেএলও প্রধান জীবন সিংহ। পরে রাজ্যের দাবি থেকে রাষ্ট্রের দাবি তুলতে শুরু করে কেএলও। বিজেপি অবশ্য পাল্টা দাবি করেছেন, বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলির সঙ্গে বরাবর সম্পর্ক রয়েছে তৃণমূলের।
কোচবিহারে তৃণমূলের দুই নেতা, প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় ও প্রাক্তন মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণকে হুমকি দিয়েছিল কেএলও। পার্থপ্রতিম বলেন, “হেরে গিয়েও উত্তরবঙ্গ আলাদা রাজ্যের দাবি তুলেছেন বিজেপির সাংসদ-বিধায়করা। আসলে মানুষের আবেগের কথা বলে একটা অস্থিরতার পরিবেশ তৈরি করাই ছিল লক্ষ্য। তার ফলেই কেএলও উৎসাহিত হয়েছে। রাজ্যের দাবি থেকে সরে গিয়ে রাষ্ট্রের দাবি তুলেছে তারা।” একই অভিযোগ আলিপুরদুয়ারের তৃণমূলের নেতাদেরও। তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা চেয়ারম্যান মৃদুল গোস্বামী বলেন, “রাজ্য ভাগের দাবি তুলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা ও বিজেপির নেতারাই বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে মদত দিয়েছেন। যার জেরে এ ধরনের শক্তি মাথা চাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে আমরা চাই সবাই সমাজের মূল স্রোতে থাকুক। কেউ ভুল পথে পা না বাড়ান।”
বিজেপি অবশ্য তৃণমূলের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। মঙ্গলবার ফোন বন্ধ থাকায় বিষয়টি নিয়ে বার্লার প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলার আহ্বায়ক ভূষণ মোদক পাল্টা বলেন, “বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে বিজেপি কখনও মদত দেয় না। বরং মাওবাদী থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে তৃণমূল যে অতীতে মদত দিয়েছে, তার অনেক উদাহরণ রয়েছে।” বিজেপির কোচবিহার জেলার সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “তৃণমূল কিছু ভিত্তিহীন অভিযোগ করে বিজেপিকে কোণঠাসা করতে চাইছে। কিন্তু মানুষ তো সব বুঝতে পারছে। তাই এ সব বলে কিছু লাভ হবে না।”