—প্রতীকী চিত্র।
পুজোর আমি, পুজোর তুমি। জলপাইগুড়ির লোকে বলে, এখানকার তৃণমূলের গোষ্ঠী-সমীকরণও নাকি চেনা যায় পুজো দিয়েই!
মোহন বসুর কালীপুজোয় শামিল হলেন কৃষ্ণ দাস। জলপাইগুড়িতে তৃণমূলের ঘরে এই খবরে তোলপাড় এ শহরের রাজনীতি। দলের অন্দরে প্রশ্ন, তা হলে কি তৃণমূলের শহরের রাজনীতিতে নতুন মোড় আসছে? এই চর্চার অন্যতম কারণ, মোহন বসু ছিলেন জলপাইগুড়ি পুরসভার টানা ১৭ বছরের পুরপ্রধান। মোহন বসুর হাত ধরেই জলপাইগুড়ি পুরসভার ক্ষমতা পেয়েছে তৃণমূল। বর্তমানে তিনি অসুস্থ। অন্য দিকে, তৃণমূলের এসসি-এসটি সেলের সভাপতি কৃষ্ণ দাসকে গত কয়েক বছর ধরেই জলপাইগুড়ির শহরের কয়েকটি ওয়ার্ডে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। সূত্রের দাবি, গত পুরসভা ভোটে কয়েকটি ওয়ার্ডে কৃষ্ণ দাসের অনুগামীরা দলের টিকিট পেতে সক্রিয় হলেও পাননি। গত পুরভোটে শহরের অধিকাংশ ওয়ার্ডের টিকিট নিজের অনুগামীদের পাইয়ে দিতে পেরেছিলেন জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়। সৈকতের কালীপুজোর বহর এ বার চমকে দেওয়ার মতো। সে প্রেক্ষিতে অসুস্থ মোহন বসুর পুজোয় কৃষ্ণ দাসের শামিল হওয়া এবং তিন বছর পরে ফের সে পুজোর উদ্যোক্তাদের জাঁকজমক করে তিন দিন ধরে সাংস্কৃতির অনুষ্ঠানের আয়োজনের তাৎপর্য তৃণমূলের অন্দরে গোষ্ঠীর নতুন বিন্যাসের জল্পনা
বাড়িয়েছে।
জলপাইগুড়িতে এক সময়ে মোহন বসুর পুজোর বাজেট ছিল অন্য পুজোর ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিশিষ্ট শিল্পীরা এসে গান গেয়েছেন পুজোর জলসায়। শেষ বার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বড় আয়োজন হয়েছিল ২০১৯ সালে, সে সময়ে মোহন বসু ছিলেন পুরপ্রধান। তার পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পুজোর আয়োজন কমতে থাকে। তৃণমূলের এসসি-এসটি সেলের সভাপতি কৃষ্ণ দাস বলেন, “মোহন বসু আমাদের শ্রদ্ধেয় নেতা। তিনি অসুস্থ। কিছু দায়িত্ব তো নিতেই হয়। মোহন বসুর পুজোয় আমিও শামিল হয়েছি এ বার।”
জলপাইগুড়ি শহরে এক দিকে, জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকতের পুজো, অন্য দিকে, শহর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুজো। শহর তৃণমূলের পুজো-রাজনীতিতে কি এ বার তিনিও নাম লেখালেন? এর প্রভাব শহরে পুর রাজনীতিতেও কি পড়বে? বিশেষ করে সৈকত এবং কৃষ্ণের ‘মধুর’ সম্পর্ক দলের অন্দরে কারও যেখানে অজানা নেই। কৃষ্ণ বলেন, “পুজোয় শামিল হওয়ার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।”
শহর লাগোয়া আর একটি কালীপুজোও এ বার নজর কেড়েছে মণ্ডপসজ্জায়। এই পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা রাজেশ মণ্ডল গত পঞ্চায়েত ভোটের পরে পঞ্চায়েত সদস্য থেকে প্রধান হয়েছেন। তিনি কৃষ্ণ দাসের ‘শিবিরের’ বলেই পঞ্চায়েত ভোটে প্রকাশ্যে এসেছে।