পার্সেল খুলতেই বিস্ফোরণ। নিজস্ব চিত্র।
হেমতাবাদের বাহারাইল এলাকায় পার্সেল বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় টোটো চালককে আটক করল পুলিশ। পুলিশ জানায় ধৃত টোটো চালকের নাম রঞ্জন রায়। বাড়ি বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েত অফিসের পার্শ্ববর্তী খালবিষ্ণুপুর এলাকায়। পুলিশের দাবি, ঘটনার পর গা ঢাকা দেয় রঞ্জন। রবিবার সকালে রায়গঞ্জের শেরপুর পঞ্চায়েতের পকম্বা এলাকায় শশুরবাড়ি থেকে টোটো-সহ তাকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রঞ্জন জানায়, বিষ্ণুপুর থেকে বাহারাইলের দিকে আসার সময় চুরামিল এলাকায় টোটোটিকে দাড় করায় অপরিচিত বাইক আরোহী দুই যুবক। বাইক খারাপ হয়েছে বলে তাঁদের কাছে থাকা পার্সেলটি বাহারাইলের ওষুধ ব্যবসায়ী বাবলু চৌধুরীর দোকানে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে। পার্সেল পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাঁদের মধ্যে এক জন ১০ টাকা ভাড়াও দেয় বলে জানান আটক চালক। রঞ্জন নিজেই বাবলুর হাতে সেই পার্সেলটি তুলে দিয়েছে বলে পুলিশকে জানায়। শুক্রবার বিকেলে ওই পার্সেল ফেটে জখম হন বাবলু-সহ চার জন। এক জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দিলেও বাকিরা হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন।
অচেনা দুই যুবকের দেওয়া পার্সেল টোটো চালক কেন নিলেন, পার্সেলটি টোটো চালকের হাতে কেউ দিয়েছে, না কি সে নিজেই পার্সেলটি বানিয়েছে সে ব্যাপারে তদন্ত করছে পুলিশ। এ দিকে বাহারাইলে যেখানে পার্সেল বোমা ফেটেছে সেই জায়গা পলেথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে পুলিশের তরফে। বিস্ফোরণস্থলে ফরেন্সিক দলের আসার কথা থাকলেও এ দিন বিকেল পর্যন্ত তারা সেখানে আসেননি বলে পুলিশ সুত্রে খবর।
এ দিন হেমতাবাদ থানায় উপস্থিত হয়ে রঞ্জনের মা ভবতারিণী রায় জানান, বছর দু’য়েক আগে পকম্বায় বিয়ে হয় রঞ্জনের। মাস তিনেক আগে শশুরবাড়ি থেকে দান হিসেবে টোটোটি রঞ্জনকে দিয়েছে। টোটো চালিয়েই সংসার চালান রঞ্জন। ভবতারিণীর দাবি, পার্সেলে কি রয়েছে তা জানা ছিল না রঞ্জনের। তাঁর ছেলে নির্দোষ বলে দাবি মায়ের।
রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী গোলাম রব্বানি এ দিন আহতদের দেখতে রায়গঞ্জ মেডিক্যালে যান। সেখান থেকে ফিরে বাহারাইলে বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করেন। পরে আহত বাবলুর বাড়ি গিয়ে পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলেন। সঙ্গে ছিলেন, হেমতাবাদের বিধায়ক সত্যজিৎ বর্মণ, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখর রায়। রব্বানি বলেন, ‘‘আহদের চিকিৎসা চলছে। আহতদের ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ টোটো চালককে আটক করেছে।’’ অভিযুক্তরা ধরা পড়বে বলেও জানান তিনি। রায়গঞ্জ পুলিশ সুপার মহম্মদ সানা আখতার বলেন, ‘‘টোটো চালককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্ত চলছে।’’