IPS

IPS Officer: থানায় বসে ইন্টারনেট, দুঃস্থ পড়ুয়াদের মোবাইল দিচ্ছেন এসপি, অনলাইনে জয়েন্টের প্রশিক্ষণ

২০১৩ সালের আইপিএস রঘুবংশী। তাঁর ইচ্ছা ছিল, দুঃস্থ পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াবেন। আলিপুরদুয়ারে বদলি হতেই তাঁর মাথায় ফের ভেসে ওঠে সেই স্বপ্ন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২২ ১৪:৫৭
Share:

ওয়াই রঘুবংশী। — নিজস্ব চিত্র।

এক দিকে আইনশৃঙ্খলার ভার। অন্য দিকে, ১৫০ পড়ুয়ার ভবিষ্যৎও তাঁর কাঁধে। তিনি আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী। দুঃস্থ পডুয়ারা যাতে আইআইটি বা ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হন সে জন্য অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছেন ওই পুলিশকর্তা।

Advertisement

২০১৩ সালের আইপিএস রঘুবংশী। বরাবরই তাঁর ইচ্ছা ছিল, দুঃস্থ পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াবেন। আলিপুরদুয়ারে বদলি হতেই তাঁর মাথায় ভেসে ওঠে এত দিন ধরে দেখা সেই স্বপ্নটা। ওই এলাকায় বহু সংখ্যক জনজাতি মানুষের বাস। চা বাগানই যাঁদের প্রধান কর্মস্থল। তাঁদের অনেকের নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা। ফলে ইচ্ছা থাকলেও সরকারি চাকরি বা আইআইটি-র মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া তাঁদের কাছে স্বপ্ন মাত্র। সেই স্বপ্ন যাতে বাস্তব হয়ে ওঠে, কোমর বেঁধে সেই চেষ্টা শুরু করেছেন রঘুবংশী। ওই ধরনের পরীক্ষায় যাতে পড়ুয়ারা পাশ করতে পারে সে জন্য অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছেন রঘুবংশী। তিনি বলেন, ‘‘সামান্য ভুলের জন্য ভাল ফলাফল করতে পারে না অনেকেই। তাদের জন্য আমি এই অনলাইন প্রশিক্ষণের কথা চিন্তাভাবনা শুরু করি।

কিন্তু প্রশিক্ষণ শুরু করলেই তো হল না। অনেক পড়ুয়ার মোবাইল নেই। আবার অনেকের অভিভাবকরা জানেন না ইউপিএসসি বা আইআইটি কী! তাঁদের ক্ষেত্রে কী হবে? সেই মুশকিলও আসান করেছেন রঘুবংশী। অনেক পড়ুয়ার হাতে মোবাইল তুলে দিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার। তবে মোবাইল থাকলেই হল না, প্রয়োজন ইন্টারনেট সংযোগ। সে জন্য ওই সব পড়ুয়াদের স্থানীয় থানায় পাঠিয়ে ইন্টারনেটেরও ব্যবস্থা করেছেন। এই কাজে রঘুবংশীর পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁর বন্ধুরা এবং একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

Advertisement

অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য প্রায় সব স্কুলেই পরীক্ষা নেন রঘুবংশী। তার মধ্যে থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ৫০ জন পড়ুয়াকে বাছাই করা হয়। তাঁদের দেওয়া হয় অনলাইন প্রশিক্ষণ। নির্বাচিত পড়ুয়াদের প্রতি সপ্তাহে তিন দিন দেড় ঘণ্টা করে পদার্থবিদ্যার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। রসায়নবিদ্যা পড়ানো হয় এক ঘণ্টা করে সপ্তাহে পাঁচ দিন। আগে শুধু মাত্র দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের দেওয়া হত ওই প্রশিক্ষণ। তবে এ বার একাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারাও ওই সুযোগ পাচ্ছেন। রঘুবংশীর কোচিং ক্লাসে পড়ুয়ার সংখ্যা এখন বেড়ে হয়েছে শ’দেড়েক। তাঁর কথায়, ‘‘দুই থেকে আড়াই মাস ধরে এই অনলাইন প্রশিক্ষণ চলছে। কর্মব্যস্ততার মাঝেও ছাত্র-ছাত্রীদের কথা ভেবে এই প্রচেষ্টা। যাঁরা ইউপিএসসি বা আইআইটি পরীক্ষা দেবে কিন্তু যাদের অর্থের জন্য ভাল প্রশিক্ষণ নেওয়ার সামর্থ্য নেই, তাঁদের কথা ভেবেই এই উদ্যোগ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement