প্রতীকী ছবি
বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার বসানোকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল বিবাদ। আর সেই ঘটনা থেকেই উঠল মারধরের অভিযোগ। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটে মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার শুকপাড়া গ্রামে। অভিযোগ, বিজেপির এক কর্মী ও তাঁর স্ত্রীকে মারধর করেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁর সঙ্গীরা। আক্রান্ত দম্পতি ভর্তি রয়েছেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। যদিও তৃণমূলের তরফে পাল্টা অভিযোদ, তাদের সদস্যদের উপরই হামলা করা হয়েছে।
এ দিনই রাতে বৈষ্ণবনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আক্রান্ত দম্পতির পরিবারের লোকেরা। ঘটনায় পাল্টা হামলা চালানোর অভিযোগ করেছেন ওই গ্রামপঞ্চায়েত সদস্য মিঠুন হালদারও। দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতেই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তারা জানায়, জখম হন মহাদেব মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী অর্চনা। মহাদেব নিজের জমিতেই চাষবাস করেন। তাঁদের দু’জনেরই শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলারুজু করা হয়েছে। গ্রাম্যবিবাদের জেরে গোলমাল হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
বৈষ্ণবনগরের কুম্ভীরা পঞ্চায়েতের শুকপাড়ায় সম্প্রতি বিদ্যুৎ দফতরের তরফে একটি ট্রান্সফরমার বসানো হয়। সেই ট্রান্সফরমারটি বাড়ির সামনে বসাতে আপত্তি জানান মহাদেব। আর তাঁর দাবি, রাস্তার পাশে ওই জমিতেই সেটি বসানোর দাবি জানান মিঠুন। আর তা নিয়েই দু’পক্ষের মধ্যে সপ্তাহ খানেক আগেই বচসা হয়। এ দিন রাতে বাজার করে বাড়ি ফিরছিলেন মহাদেব। তিনি জানান, সেই সময় হঠাৎ মিঠুন দলবল নিয়ে তাঁর পথ আটকান, ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলাও চালান। তাঁর আরও দাবি, তখনই স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন অর্চনাও।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এরপরে জখমদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান পরিবারের লোকেরা। রাজনৈতিক কারণেই হামলা হয়েছে বলে দাবি করেন মহাদেব। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট থেকেই আমাদের উপরে মিঠুনের ক্ষোভ রয়েছে। কারণ আমরা বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। তাই জোর করে আমাদের বাড়ির সামনে ট্রান্সফরমার বসানো হল। তাতে আপত্তি করাতেই পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালানো হল।’’
যদিও মিঠুন অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের উপরেই পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে। পুলিশে অভিযোগও জানিয়েছি।’’ এটি রাজনৈতিক কোনও গোলমাল নয় বলেই দাবি করেছেন তৃণমূল জেলা চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন। তাঁর দাবি, ‘‘গ্রাম্য বিবাদকে রাজনৈতিক রং লাগাতে চাইছে বিজেপি।’’ যা নিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডলের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল পঞ্চায়েত ভোট থেকেই এলাকায় অশান্তি করছে, আমাদের কর্মীদের উপর হামলাও চালানো হচ্ছে। এ দিনও রাজনৈতিক কারণেই মারধর করা হল।’’