শিকারি খুঁজতে বনে কুকুর

রবিবার বিকেলে গরুমারা অভয়ারণ্যের কাছে দুই অজ্ঞাতপরিচয় যুবক ঘোরাঘুরি করছে বলে খবর যায় বন দফতরের কাছে। গরুমারা জাতীয় উদ্যান জুড়েই এখন হাই অ্যালার্ট জারি করে ব্যাপক টহলদারি শুরু হয়েছে।

Advertisement

সব্যসাচী ঘোষ 

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৪১
Share:

গন্ধ শুঁকে: চোরাশিকারিদের খোঁজে বন দফতরের গোয়েন্দা কুকুর করিম। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।

একটি রুমাল এবং এক জোড়া জুতো। তাই শুঁকে স্নিফার ডগ করিম খোঁজ করতে বেরোয় চোরাশিকারিদের। করিমের আচরণ থেকে চোরাশিকারিদের সম্পর্কে শেষ পর্যন্ত একটা ধারণাও তৈরি হয়েছে বন দফতরের।

Advertisement

রবিবার বিকেলে গরুমারা অভয়ারণ্যের কাছে দুই অজ্ঞাতপরিচয় যুবক ঘোরাঘুরি করছে বলে খবর যায় বন দফতরের কাছে। গরুমারা জাতীয় উদ্যান জুড়েই এখন হাই অ্যালার্ট জারি করে ব্যাপক টহলদারি শুরু হয়েছে। জলদাপাড়াতে গণ্ডার হত্যার পর থেকেই উত্তরের সমস্ত জাতীয় উদ্যানে ব্যাপক টহলদারি শুরু হয়। এরই মাঝে গত রবিবার সন্ধ্যায় সন্দেহজনক ভাবে গরুমারা লাগোয়া সড়কে কয়েক জনকে দেখতে পান বনকর্মীরা। চোরাশিকারিরা এই পথে বন্যপ্রাণের দেহাংশ পাচার করতে পারে সেই সন্দেহে এরপরই রাত থেকে বন ও পুলিশকর্মীরা পৃথক পৃথকভাবে জাতীয় সড়কের বিভিন্ন এলাকাতে তল্লাশি শুরু করেন। রাত দশটা নাগাদ সেই তল্লাশি ভেদ করে একটি সাদা ছোট গাড়ি চালসার উদ্দেশ্যে পালিয়ে যায় বলে বন দফতর সূত্রেই খবর।

ক্রান্তি ফাঁড়ির ওসি খেসাং লামা এবং মেটেলি থানার ওসি প্রবীর দত্ত যৌথ ভাবে তল্লাশি করেও সেই গাড়ির খোঁজ পাননি। এর পরে সোমবার থেকে গরুমারা এলাকা জুড়ে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়। বন দফতরের তরফে বক্সা থেকে বনদফতরের নিজস্ব বিশেষজ্ঞ কুকুর করিমকে গরুমারাতে নিয়ে আসা হয়। এরপর বন ও মালবাজার মহকুমার বিভিন্ন থানার পুলিশরা যৌথ ভাবে বনটহল শুরু করে।

Advertisement

করিম বিচাভাঙা রেঞ্জ থেকে রুমাল আর জুতো শুঁকে প্রথমে চলে যায় নেওড়া নদী লাগোয়া চা বাগানের কাছে একটি হাটের দিকে। সেখানে একটি জায়গায় গিয়ে করিম থেমে যায়। তখন আবার তাকে বিচাভাঙা নিয়ে যাওয়া হলে করিম এ বার লাটাগুড়ির জঙ্গলে নদীর কাছে গিয়ে থামে। তা দেখে বন দফতরের ধারণা, চোরাশিকারিরা এমনই কোনও জায়গা থেকে সড়ক পথে গাড়ি করে পালিয়েছে। যে কারণে করিম আর তাদের গন্ধ পায়নি। তবে কোন পথ দিয়ে চোরাশিকারিরা যাতায়াত করছে, তার হদিশ মিলল বলে বন দফতরের অনেকেই মনে করছেন। গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও নিশা গোস্বামী বলেন, “আমরা কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নই বলেই আমাদের কুকুর আনিয়ে বনটহল শুরু হয়েছে।”

মালবাজারের এসডিপিও দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, “বন দফতরের সঙ্গে আমরা যৌথ বনটহল করছি, পুলিশ তৎপর রয়েছে।” উল্লেখ্য, গন্ডার নিধন হলেও সেই গন্ডারের খড়গ ভিন্ রাজ্যে পাচার রোখা যেমন এখন বনদফতরের কাছে চ্যালেঞ্জ, তেমনই নতুন করে চোরাশিকার রুখতেও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টণী গড়ে তোলাও খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। ফলত আগামী বেশ কিছু দিন হাই অ্যালার্ট চলবে বলেই বনদফতরের তরফে জানা গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement