উদ্ধার দেড় কোটির চোরাই জামাকাপড়

ডিআরআই সূত্রের খবর, দু’টি ট্রাকে করে এগুলি আনা হয়েছিল। তার মধ্যে একটি সিকিম নম্বরের, আর একটি পশ্চিমবঙ্গ নম্বরের। দু’টি বিদেশি সংস্থার জুতো, জ্যাকেট, সোয়েটার-সহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক বোঝাই করা ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:২৭
Share:

উদ্ধার হওয়া জুতো। নিজস্ব চিত্র

শহর থেকে উদ্ধার হল চোরাইপথে আনা প্রায় দেড় কোটি টাকার বিদেশি পোশাক। বৃহস্পতিবার রাতে শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানার সেবক রোড এলাকার একটি সিনেমা হলের সামনের ঘটনা। কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা শাখার (ডিআরআই) আধিকারিকরা এ দিন ওই চোরাই পোশাক উদ্ধার করেন। তাঁরা জানান, চিন থেকে চোরাই পথে ভারতে ঢুকেছে ওই পোশাক। ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম সাগর ছেত্রী, অরুণ তামাং, গোপাল খাওয়াস এবং মহেশ শর্মা। এদের মধ্যে সাগর শিলিগুড়ির ও অরুণ কালিম্পংয়ের বাসিন্দা। গোপাল ও মহেশ সিকিমের মেল্লি এলাকার বাসিন্দা।

Advertisement

ডিআরআই সূত্রের খবর, দু’টি ট্রাকে করে এগুলি আনা হয়েছিল। তার মধ্যে একটি সিকিম নম্বরের, আর একটি পশ্চিমবঙ্গ নম্বরের। দু’টি বিদেশি সংস্থার জুতো, জ্যাকেট, সোয়েটার-সহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক বোঝাই করা ছিল। উদ্ধার করা সামগ্রীর মূল্য প্রায় এক কোটি ২৭ লক্ষ টাকা বলে ডিআরআই আধিকারিকেরা জানিয়েছেন।

শুক্রবার ধৃতদের শিলিগুড়ি এসিজেএম আদালতে তোলা হলে জামিন মঞ্জুর হয়নি। ডিআরআই-এর আইনজীবী ত্রিদিব সাহা বলেন, ‘‘অভিযুক্তরা চিন সীমান্ত দিয়ে বেআইনিভাবে জিনিস নিয়ে শিলিগুড়ি এনেছিলেন। তাঁরা কোথাও সেগুলি পাচারের চেষ্টা করছিলেন, তা ডিআরআই খতিয়ে দেখছে।’’

Advertisement

তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, সিকিমের ভারত-চীন সীমান্তের নাথু-লা দিয়ে পোশাকগুলি বেআইনিভাবে শিলিগুড়িতে আনা হয়েছিল। শিলিগুড়ির কোনও গুদামে সেগুলি মজুত হত। পরে বিভিন্ন দোকানে সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল বলে জানতে পেরেছে ডিআরআই আধিকারিকরা। ভারত-চীন সীমান্তে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চলে। তার আড়ালেই এ ভাবে বেআইনি বিদেশি পোশাক শহরে ঢুকেছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের। সংবেদনশীল ওই সীমান্ত থেকে নজরদারির অভাবে সিকিম হয়ে অবৈধ পোশাকগুলো শিলিগুড়ি পর্যন্ত ঢুকেছিল বলে অভিযোগ। ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ডিআরআই আইনজীবী ত্রিদিব সাহা। তাঁর দাবি, ‘‘নজরদারি ঢিলেঢালা ছিল। একটি রিপোর্ট দিল্লিতে পাঠানো হবে।’’

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, এদেশে চিন, হংকং, সিঙ্গাপুরের মত দেশের বিদেশি পোশাক, জুতো, স্লিপার, প্রসাধনী সামগ্রী-সহ বহু জিনিসপত্র কয়েক বছর আগেও নেপাল সীমান্ত দিয়ে চোরাপথে ঢুকত। বিদেশ থেকে নেপালে মালপত্র আসার পরে ‘লাইনমান’দের মাধ্যমে তা শিলিগুড়ি এসে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়ানো হত। পোশাক ছাড়াও মোবাইল, ট্যাব, বিদেশি মদ এবং বিভিন্ন বৈদ্যুতিন যন্ত্র আসত। সীমান্তে ধরপাকড়, নজরদারি বাড়তেই একদল মহিলা শরীরে বেঁধে সেসব পানিট্যাঙ্কি থেকে শহরে নিয়ে আসতেন। শুল্ক দফতর, ডিআরআই তাতে নজর দেওয়ায় নেপালের রুট বন্ধ হতে বসেছে বলে দাবি।

তবে চিনের নাথু-লা সীমান্ত দিয়ে চোরাকারবার যে শুরু হয়েছে তা বছর দেড়েক আগেই টের পাওয়া গিয়েছিল বলে জানাচ্চে তদন্তকারীদের একাংশ। সেবার সেবক রোড এলাকার সিকিম এবং ভিন্‌রাজ্যের কয়েকজন বাসিন্দার গাড়িতে লুকিয়ে রাখা কোটি টাকার সোনা উদ্ধার হয়। ধৃতেরা জেরায় নাথু-লা সীমান্তের কথা জানিয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement