ঝাঁঝালো: দাম বাড়ছে দুইয়েরই। নিজস্ব চিত্র
অসম-মেঘালয়ের অশান্তির আঁচ পড়তে পারে আদার ঝাঁঝেও! ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, আরও কয়েকদিন প্রতিবেশী রাজ্যে অচলাবস্থা জারি থাকলে গোটা উত্তরবঙ্গের আনাজ বাজারে আদার দাম বাড়তে পারে। কারণ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার আদার জোগানের অনেকটাই অসম ও মেঘালয় নির্ভর।
উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ী সংগঠন ফোসিনের সদস্য রানা গোস্বামী বলেন, “গুণগতমান অপেক্ষাকৃত ভাল বলে মেঘালয় ও অসমের বিস্তীর্ণ এলাকার আদার চাহিদাই উত্তরবঙ্গের বাজারে বেশি। শীতের মরসুমে ওই চাহিদা আরও বেড়ে যায়। কিন্তু কয়েকদিন ওই আদার আমদানি প্রায় বন্ধ।এমন অবস্থা টানা চললে মজুত আদা ফুরোলে দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।” কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক চাঁদমোহন সাহা বলেন, “ভূটানের আদার সঙ্গে জেলায় উৎপাদিত আদাও জেলার বাজারে রয়েছে। তবে ওই জোগান চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত হবে না। তাই অসম, মেঘালয়ের আদার জোগান আর কিছুদিন না মিললে দাম বাড়তেও পারে।”
ব্যবসায়ীরা জানান, কোচবিহারের একাধিক বাজারে খুচরো আদা প্রতি কেজি ১২০-১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগে ওই দাম আরও বেশি ছিল। নতুন আদা বাজারে আসতে শুরু করায় দাম কিছুটা নামে। তবে ভিনরাজ্যের আমদানি একেবারে কমে গেলে ফের চাহিদা ও জোগানের ফারাক বাড়বে। কারণ, অসম হয়েই মেঘালয়ের উৎপাদিত আদা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বাজারে পৌছয়। ওই রুটেই যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাতেই পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছেন অনেকে। দিনহাটার পাইকারি আনাজ ব্যবসায়ী মালেকুল রহমান বলেন, “শুধুমাত্র দিনহাটাতেই দৈনিক গড়ে তিন টন আদার চাহিদা। এখানকার পাইকারি বাজারে ওই আদার সবটাই অসম, মেঘালয়ের গোয়ালপাড়া, শিলচর, শিলং থেকেই আনা হয়। কয়েকদিন থেকে ওই আদা আসছে না। এদিকে মজুত ফুরিয়ে যাওয়ার অবস্থা তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থা আর কয়েকদিন চললে দেখবেন আদার দাম এবার দু’শো পেরোতে পারে।”
কয়েকজন বাসিন্দা জানান, পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধিতে এমনিতেই নাজেহাল অবস্থা। যার জেরে ভর্তুকিতে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রিতে উদ্যোগীও হয় রাজ্য সরকার। তাতেও অবশ্য চাহিদা মিটছে না। রসুনের বাজারও চড়া। এই অবস্থার মধ্যে খানিকটা নামতে থাকা আদার দাম ফের বাড়ার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছেই।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, জেলার আনাজ বাজারে খুচরো, পাইকারি দুই দাম নিয়ে নজর রাখা হচ্ছে।