তৃণমূল নেতা রঞ্জনশীল শর্মা।
ফের রঞ্জনশীল শর্মার বিরুদ্ধে অপত্তিকর প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠল। এ বার বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি অনাথ আশ্রমের কর্ণধার অভিযোগ আনলেন রঞ্জনের বিরুদ্ধে। ওই মহিলার দাবি, আশ্রমের মেয়েদের সেবাদাসী হিসেবে চেয়ে অপত্তিকর প্রস্তাব দিয়েছিল রঞ্জন। তাঁর আরও অভিযোগ, রঞ্জনের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে ২০১৬ সালে ওই হোম বন্ধ করে দিয়েছেন। এখন হোমের মেয়েরা কেউ অসহায় ভাবে দিন কাটাচ্ছেন। কারও বিয়ে হয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার ওই মহিলা আশিঘর পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন। রঞ্জন পাল্টা অভিযোগ তুলে বলেন, ‘‘অনাথ আশ্রমের আবাসিকদের দিয়ে অসামাজিক কাজ করানো হত।’’
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযোগ হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
মহিলার অভিযোগ, রঞ্জন প্রভাবশালী কাউন্সিলর হওয়ায় তিনি তখন মুখ খোলার সাহস পাননি। দিন কয়েক আগে এক শিক্ষিকা রঞ্জনের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় তিনি এগোতে পেরেছেন। ওই মহিলার দাবি, গত পুরভোটে রঞ্জন জেতার পরে এলাকায় যখন বিজয় উৎসব হয়, তখন আবাসিকদের খাওয়ানোর জন্য তিনিও ৫ কেজি মাংসের আর্জি জানান। তার পরিবর্তে রঞ্জন হোমের মেয়েদের সেবাদাসী হিসেবে চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ মহিলার। তখন তিনি ভেবেছিলেন, বাড়ির পরিচারক চাইছেন কাউন্সিলর। তেমন কিছু দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, পরে ফোন করে এক আবাসিক চেয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করলে তিনি প্রতিবাদ করে ফোন কেটে দেন। তাঁর সম্পর্কেও কাউন্সিলর আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ।
মহিলার অভিযোগ, হোমের অনুমোদন ছিল না। জলপাইগুড়ি জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে তিন বার আবেদন করেও তা মেলেনি। অথচ চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিই আশ্রমে অনাথদের পাঠাত বলে দাবি ওই মহিলার। তাঁর অভিযোগ, সেই সময়ে রঞ্জন এবং তৎকালীন তৃণমূল নেত্রী শিখা চট্টোপাধ্যায় একযোগ ষড়যন্ত্র করেন। হোম অবৈধ ঘোষণা করে ২২ আবাসিককে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। শিখা এখন বিজেপিতে। তিনি বলেন, ‘‘ওই আশ্রম থেকে শিশু বিক্রির অভিযোগও ওঠে। পরে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি আবাসিকদের উদ্ধার করে।’’
একই অভিযোগ করে রঞ্জন বলেন, ‘‘রাত হলে আশ্রমের বাইরে গাড়ির লাইন পড়ে। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে মহিলা তাঁদের নামে অভিযোগের ভয় দেখান।’’ ওয়ার্ডে তৃণমূলের মহিলা সংগঠন এই নিয়ে আন্দোলনে নামবে বলেও জানান। যদিও দলের মহিলা সংগঠনের জেলা নেতৃত্ব জানান, তাঁরা বিষয়টি খোঁজ করে তবেই সিদ্ধান্ত নেবেন। পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘দলনেত্রী বা আমরা কেউ এ ধরনের কাজকে কখনই সমর্থন করি না। তবে এত দেরিতে অভিযোগ কেন হল তা-ও দেখা দরকার। পুলিশ সবটা দেখুক।’’