শিলিগুড়ি পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
জল সমস্যা সামলাতে এ বার মহানন্দা নদীর জল পরীক্ষা করতে পাঠাচ্ছে শিলিগুড়ি পুরসভা। তিস্তায় জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ মেরামতির জেরে, তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানালে তিস্তা থেকে জল আসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যে জল ক্যানালে মজুত রয়েছে, তাতে দিন চারেক চলবে। তার পরে সমস্যার আশঙ্কা রয়েছে। তখন যাতে মহানন্দার জলস্তর ঠিক রেখে ক্যানাল থেকে জল তুলে সরবরাহ করা যায়, সে প্রস্তুতি চলছে। মহানন্দার জলের মান তিস্তার মতো নয়। তাই সেই জল বার বার পরীক্ষা করে পানের জন্য যথাযথ কি না, তা নিশ্চিত হতে চাইছে পুরসভা। তবে সমস্যা তৈরি হয়েছে মহানন্দা ব্যারাজের ৯ নম্বর লক গেটে ‘লিক’ দেখা দেওয়ায়। শনিবার ফুলবাড়ি ব্যারাজে গিয়ে সেচ দফতরের সঙ্গে তা নিয়ে কথা বলেন শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব।
এ দিন মেয়র ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার, জল সরবরাহ বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত এবং বাস্তুকারদের নিয়ে ফুলবাড়ি ব্যারাজ পরিদর্শন করেন মেয়র। সেখান থেকে গজলডোবায় যান তিস্তার বাঁধের মেরামতির কাজ পরিদর্শনে। মেয়র জানান, ব্যারাজে জলস্তরের উচ্চতা ১০৭.৩৫ মিটার থাকলে, জলের সমস্যা হবে না। সেচ দফতর জানিয়েছে, তারা জলের এই উচ্চতা বজায় রাখবে। তবে ৯ নম্বর গেটে ‘লিক’ রয়েছে। সেচ দফতর তাদের লোকদের নিয়ে বিষয়টি দেখছে। মেয়র জনস্বাস্থ্য এবং কারিগরি দফতরকে তা দেখতে বলেছেন।
মেয়র বলেন, ‘‘লিকেজ থাকা সত্ত্বেও জলের উচ্চতা ঠিক রয়েছে। লিকেজ বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। মহানন্দার এই জল পানযোগ্য কি না তা নিয়ে আগের দুটো পরীক্ষায় ইতিবাচক রিপোর্ট মিলেছে। আরও দু’দফায় পরীক্ষা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ থেকে করা হচ্ছে। সেই মতো জল পরিস্রুত করে সমস্ত ব্যবস্থা নিয়ে সরবরাহ করা হবে। তার আগে, পর্ষদের রিপোর্ট দেখে তাদের সম্মতি নেওয়া হবে।’’ পুর কর্তৃপক্ষ জানান, কাল, সোমবার জলের নমুনা পাঠানো হবে। দু’-এক দিনের মধ্যে তারা রিপোর্ট দেবে। গজলডোবায় গিয়ে ব্যারাজের কাজ পরিদর্শন করেন মেয়র। সেচ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথাও হয় তাঁর।
জলের অভাবে সমস্যা সামলাতে এ দিন ১৪টি ওয়ার্ডে ২১টি ট্যাঙ্কার পাঠানো হয়েছে। এ দিনও বামেদের তোপ দেগে মেয়র বলেন, ‘‘বিকল্প ইনটেক ওয়েল ৪০ বছরে বামেরা করতে পারেননি। তা হলে আজ ক্যানাল শুকনো করে মেরামত করাতে হলেও, তিস্তা ক্যানালের বিকল্প ইনটেক ওয়েল থেকে জল তোলা যেত। সেটা করতে পারেননি।’’ বিরোধীদের বক্তব্য, তিস্তা থেকে ক্যানালে জল বন্ধ করা হয়েছে। সেখানে তিস্তা ক্যানালে বিকল্প ইনটেক ওয়েল থাকলে কী সুবিধা হত তাঁরা বুঝতে পারছেন না। সিপিএমের পুরপ্রতিনিধি শরদিন্দু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পরিকল্পনার অভাব। ছ’বছর আগে বিকল্প জলের ব্যবস্থার জন্য বাম বোর্ড বলেছিল। রাজ্য তখন করতে দেয়নি। তা হলে এখন দুর্ভোগে পড়তে হত না। এখনও জনস্বাস্থ্য এবং সেচ দফতরের সঙ্গে বসে আগাম আলোচনা করে কাজ করতে পারছেন না। ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে জলের সমস্যা কী করে সামলাবেন, পরিকল্পনা নেই মেয়রের।’’ পুরসভার বিরোধী দলনেতা অমিত জৈন বলেন, ‘‘অনেক ওয়ার্ডে জল নেই। ২০টি ট্যাঙ্কার দিয়ে কী হবে? পরিকল্পনা নেই।’’