ফাইল চিত্র
অশোক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন শিলিগুড়ি বাম পুরবোর্ডের কাজের প্রশংসা করলেন তৃণমূলের মন্ত্রী গৌতম দেব। বুধবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকের শেষে চেয়ারম্যান গৌতমবাবু বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি পুরসভা এখন হাসপাতাল চত্বরের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখে। ভালই কাজ হচ্ছে। পুরসভাকে ধন্যবাদ জানাই।’’
বিরোধীদের হাতে থাকা পুরবোর্ডের কাজের প্রশংসা করছেন শাসকদলের মন্ত্রী, এমন উদাহরণ রাজ্যে বিরল নয়। তবে শিলিগুড়ি পুরসভার ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সময়ে এই নজির নেই। রাজ্যের প্রাক্তন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী অশোকবাবু শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র হওয়ার পর থেকেই মশা মারা হোক অথবা রাজ্যের অনুদান, সব বিষয়েই শাসক-বিরোধী তরজা চলছে।
শিলিগুড়ি পুরবোর্ডে ‘বিসর্জনের বাজনা’ বাজানোর মতো হুঙ্কার অথবা ‘পুরসভা দখল সময়ের অপেক্ষা’র মতো হুমকি দিয়েছেন গৌতম। পাল্টা একাধিক ‘চ্যালেঞ্জ’ ছুড়েছেন অশোকও। বুধবারের মন্তব্যের পরে গৌতমবাবুর দাবি, রাজনীতি এবং প্রশাসন ভিন্ন। অন্য দিকে, অশোকবাবুর মন্তব্য, ‘‘আমাদের পুরবোর্ড রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করে। এ প্রশংসা প্রাপ্যই।’’
পারস্পরিক প্রশংসা অবশ্য এই প্রথম নয়। পুরসভার জন্য বরাদ্দ নিয়ে ক’দিন আগেও চাপানউতোর চলছিল দু’পক্ষে। সম্প্রতি অশোক একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করেন বরাদ্দ নিয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপের জন্য। তার পরে যেন পাল্টা প্রশংসাই ফেরালেন গৌতম।
জঞ্জাল সাফাই নিয়ে দীর্ঘদিনের জটিলতা কাটাতে সম্প্রতি রোগী কল্যাণ সমিতি সিদ্ধান্ত নেয়, শিলিগুড়ি পুরসভাই সাফাইয়ের কাজ করবে, তার জন্য ফি দেওয়া হবে তাদের।
দায়িত্ব সামলাতে ‘ব্যর্থ’ মেয়রের পদত্যাগ দাবি করে দিন কয়েক আগেই দলের নেতা-কর্মীদের লাগাতার আন্দোলনের নির্দেশ দিয়েছেন গৌতম। আবার মন্ত্রী সেই পুরবোর্ডের কাজের প্রশংসা করায় দলের কর্মী-সমর্থকরা কি মনোবল হারাবেন? গৌতমবাবু তেমন মনে করেন না। তাঁর দাবি, রাজ্যের কিনে দেওয়া যন্ত্র ব্যবহার করে ফি-এর বিনিময়ে কাজ হচ্ছে। মেয়রের কোনও কৃতিত্ব নেই।
কৃতিত্ব এবং পুরবোর্ডের দখল নিয়ে চাপানউতোর যেমনই চলুক, বুধবার যে সৌজন্যের সুর শোনা গিয়েছে, শিলিগুড়ির স্বার্থে তাকে স্বাগত জানিয়েছেন শহরের বাসিন্দা বিশিষ্টদের অনেকেই।