শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র
দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এরমধ্যেই দেশের সব পুরসভাগুলিকে ‘এয়ার কোয়ালিটি অ্যাকশন প্ল্যান’ বা বাতাসের গুণমান বজায় রাখার জন্য ব্যবস্থা নিতে বলেছে। শিলিগুড়ি পুরসভার দাবি, দূষণের মাপকাঠিতে দিল্লি বা কলকাতার চেয়ে খানিকটা সন্তোষজনক অবস্থানে রয়েছে শিলিগুড়ি। তবে পরিবহণের ধোঁয়া এবং নির্মাণ সামগ্রীর ধুলো ঠেকাতে অবিলম্বে ওই পরিকল্পনা করা দরকার বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা। শীঘ্রই তা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। মেয়র অশোক বলেন, ‘‘রাজ্যে একমাত্র আমাদের পুরসভাতেই দূষণের মাত্রা দিনরাত নজরদারি করার আধুনিক যন্ত্র বসানো রয়েছে। আমরা বাকিটাও করে ফেলব।’’
পুরসভার পরিবেশ বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ির বাতাসে ভাষমাণ কণা পিএম ২.৫ এবং পিএম ১০ এর মাত্রার গড় সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বুধবারের তথ্যেও দাবি করা হয়েছে, কলকাতা বা দিল্লিতে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) যেখানে খারাপ বা খুব খারাপ অবস্থানে রয়েছে, তার তুলনায় শিলিগুড়ি বরং একটু পিছিয়েই। যানজট না হলে শিলিগুড়ির বাতাস ক্ষতিকারক জায়গায় পৌঁছয় না। তবে গত বছর একবার ৩০০ ছাড়িয়েছিল একিউআই। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আগামী পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ওই দু’টি কণার পরিমাণ ২০-৩০ শতাংশ কমিয়ে আনার কথা বলেছে। ২০১৬ সালে একটি মামলার ভিত্তিতে এই রায় দেয় আদালত। তারপর একমাত্র দিল্লিতে এই ব্যবস্থা কিছুদিন কার্যকর করা হয় মাত্র এখন কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ চাইছে, সব পুরসভাই নিয়ন্ত্রণ চালু করুক।
কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বেধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রায় দূষণ নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা করা এবং সেগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে সাম্প্রতিক ওই নির্দেশিকায়। শিলিগুড়ি পুরসভায় এখন চারটি অত্যাধুনিক সেন্সর রয়েছে শহরের বিভিন্ন জায়গায়। একটি বিদেশী সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সেগুলি থেকে নিয়মিত ভাবে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলে দূষণ নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনাও চলছে। তবে পুর এলাকায় দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে এখনও নজর দেয়নি কর্তৃপক্ষ। এ রকমই অভিযোগ করছেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, প্রথমত, বাড়িঘর নির্মাণ বা ভাঙার সময় ভেজা কাপড় দিয়ে ঢেকে সেগুলি করা বা রাস্তা তৈরি, মেরামতির ক্ষেত্রে সাকশন ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করার কথা। এগুলির কোনওটিরই নজরদারি হয় না। পরিবহণ সামগ্রী বিশেষ করে বাড়ি ভাঙা আবর্জনা লরিতে করে ঢাকা ছাড়াই এখনও পরিবহণ করা হচ্ছে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে।
তাছাড়াও পরিবহণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা পুরসভার হাতে নেই। বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকারের দাবি, সামান্য জঞ্জাল অপসারণের ব্যবস্থাই পুরসভা করতে পারছে না। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্য সরকারের কাছে প্রচুর টাকা নিয়ে সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানটাই এরা এতদিনে করতে পারেনি। বেসরকারি সংস্থার টাকায় বিদেশ ঘুরে মেয়র কেবল প্রচার করতে ভালবাসেন।’’