আপাতত শান্ত মহানন্দা। — নিজস্ব চিত্র।
কয়েক ঘণ্টার লাগাতার বৃষ্টিতে সোমবার সন্ধ্যায় জলের তলায় চলে গিয়েছিল শিলিগুড়ি শহরের বহু এলাকা। মঙ্গলবার অবশ্য আলো ফুটতেই দেখা গেল চেনা ছবি। বেশিরভাগ এলাকা থেকেই জল নেমে গিয়েছে। পাশাপাশি আকাশও পরিচ্ছন্ন। একাধিক নদীর জলস্তরও স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে। শিলিগুড়ি চেনা ছন্দে ফিরলেও, তিস্তা এবং করোলার জলস্তর আশঙ্কা বাড়িয়েছে জলপাইগুড়িতে।
সোমবার সারা রাত বৃষ্টির পর মঙ্গলবার সকাল থেকে পরিচ্ছন্ন শিলিগুড়ির আকাশ। সমতল থেকে দেখা যাচ্ছে পাহাড়ও। তবে সোমবার রাতে বৃষ্টির জেরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা শেষ কবে শিলিগুড়িতে হয়েছে, মনে করতে পারছেন না অনেকেই। রাতেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় জল সরানোর কাজে নামেন শিলিগুড়ি পুরনিগমের কর্মীরা। সোমবার রাতে ফুলবাড়ি মহানন্দার লকগেট খুলে দেওয়া হয়েছিল। ফলে বিভিন্ন এলাকা থেকে জল খুব তাড়াতাড়ি নেমে যায়। মঙ্গলবার ভোরে থেমে যায় বৃষ্টিও। তিস্তা, মহানন্দা-সহ নদীগুলিতে জলস্ফীতি থাকলেও তা বিপজ্জনক অবস্থায় নেই। অন্য দিকে দার্জিলিং এবং কালিম্পঙেও বৃষ্টি থেমেছে। পাহাড়ে কুয়াশা রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে মেঘও।
শিলিগুড়ি শহরে জল না দাঁড়ালেও, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের অন্তর্গত ঘোষপুকুর, খড়িবাড়ি এবং ফাঁসিদেওয়া এলাকার কিছু অংশ জলমগ্ন। পাশাপাশি চাষের জমি,চা বাগান এবং আনারস খেতও জলের তলায়। বিভিন্ন এলাকার কয়েকশো পরিবার জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে। তার জেরে মঙ্গলবার সকালে খড়িবাড়ি-ঘোষপুকুর রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান অনেকে। তবে পুলিশের আশ্বাসে পরে অবরোধ উঠে যায়। এর পাশাপাশি ওই এলাকার মহানন্দা, তিস্তা-সহ সব নদীরই জলস্তর বেড়েছে। ফুলবাড়ি এলাকায় মহানন্দার লকগেটও খুলে দেওয়া হয় সোমবার।
জলপাইগুড়িতে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে তিস্তা এবং করোলাকে নিয়ে। গজলডোবায় তিস্তার লকগেট থেকে জল ছাড়া হয়েছে। যার ফলে জলপাইগুড়ির দোমোহনি এবং তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত লাল সতর্কতা জারি হয়েছে। অন্য দিকে দোমোহনিতে তিস্তার যে সংরক্ষিত এলাকা রয়েছে সেখানে হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে। হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে জলঢাকার সংরক্ষিত এবং অসংরক্ষিত এলাকাতেও। জলপাইগুড়ি শহরে সোমবার রাত পর্যন্ত প্রায় ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। জলপাইগুড়িতে করোলা নদীর জল ঢুকেছে আশপাশের কিছু এলাকায়।